বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক (ফাইল ছবি)

যুক্তরাষ্ট্রে অনুমতি ছাড়াই অবৈধভাবে কিছুদিন কাজ করেছিলেন বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সের মালিক ইলন মাস্ক।

গত শতাব্দীর ৯০ এর দশকে উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে পড়াশোনার পরিবর্তে অবৈধভাবে কাজ করেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্ম নেওয়া এই ধনকুবের। এর পরিবর্তে সেই সময়টাতে তিনি নিজের স্টার্টআপ গড়ে তোলার জন্য কাজ করে যাচ্ছিলেন।

প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের বরাত দিয়ে রোববার (২৭ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

ওয়াশিংটন পোস্ট শনিবার জানিয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্মগ্রহণকারী বিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ী ইলন মাস্ক ১৯৯০ এর দশকে স্টার্টআপ কোম্পানি তৈরি করার সময় সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে কাজ করেছিলেন।

প্রভাবশালী মার্কিন এই নিউজ আউটলেটটি তাদের রিপোর্টে বলেছে, ইলন মাস্ক ১৯৯৫ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার পালো আল্টোতে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসেছিলেন কিন্তু সেখানে তার স্নাতক অধ্যয়ন প্রোগ্রামে তিনি ভর্তি হননি। এর পরিবর্তে তিনি সেসময় সফটওয়্যার কোম্পানি জিপ২ (Zip2) তৈরি করেন, যা ১৯৯৯ সালে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে বিক্রি হয়েছিল।

ওয়াশিংটন পোস্টে উদ্ধৃত দুই অভিবাসন আইন বিশেষজ্ঞ বলেছেন, একজন ছাত্র হিসাবে বৈধ কাজের অনুমোদন বজায় বা ধরে রাখার জন্য ইলন মাস্ককে অধ্যয়নের সম্পূর্ণ কোর্সে ভর্তি হওয়ার দরকার ছিল। অর্থাৎ স্নাতকে ভর্তি হলেই শিক্ষার্থী হিসেবে বৈধভাবে কাজের অনুমতি পেতে পারতেন মাস্ক।

এদিকে এই অভিযোগের বিষয়ে মাস্কের বক্তব্য জানতে তার মালিকানাধীন চার প্রতিষ্ঠান— স্পেস এক্স, টেসলা, সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানি এক্স ও দ্য বোরিং কোম্পানিতে অনুরোধ পাঠানো হয়। এমনকি মাস্কের আইনজীবী অ্যালেক্স স্পিরোর সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়। তবে মাস্কের এসব প্রতিষ্ঠান বা আইনজীবীর দিক থেকে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি।

অবশ্য ওয়াশিংটন পোস্টে উদ্ধৃত ২০২০ সালের একটি পডকাস্টে মাস্ক এই বিষয়ে বলেছিলেন, “আমি আইনগতভাবেই সেখানে ছিলাম, তবে আমার ছাত্র হিসেবে কাজ করার কথা ছিল। আমাকে যেভাবেই হোক, নিজের খরচ বহন করার জন্য কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।’ 

এ বিষয়ে ওয়াশিংটন পোস্ট মাস্কের সাবেক দুইজন সহকর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তারা বলেছেন, ১৯৯৭ সালে বা তার কাছাকাছি সময়ে মাস্ক যুক্তরাষ্ট্রে তার কাজের অনুমোদন পেয়েছিলেন।

প্রসঙ্গত, আগামী ৫ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আসন্ন এই নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন করেছেন মাস্ক।

আর ট্রাম্প বছরের পর বছর ধরে অভিবাসীদের আক্রমণকারী এবং অপরাধী হিসাবে চিত্রিত করেছেন। এছাড়া ২০১৭-২০২১ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বপালনের সময় অবৈধ অভিবাসন রোধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছিলেন ট্রাম্প।

মূলত আগামী ৫ নভেম্বর এই নির্বাচনে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে অভিবাসন নীতি। জো বাইডেন ও কমালা হ্যারিসের অভিবাসন নীতির জন্য যুক্তরাষ্ট্র অবৈধ অভিবাসীতে ছেয়ে গেছে বলে অভিযোগ করে আসছে ডোনাল্ড ট্রাম্প শিবির।

এছাড়া অভিবাসীরা পোষ্য প্রাণী মেরে খেয়ে ফেলে বলে সম্প্রতি ট্রাম্প মন্তব্য করেছেন। তার এই মন্তব্যকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনাও হয়েছে।

টিএম