ইসরায়েলি হামলা ঠেকিয়ে দেওয়ার দাবি ইরানের
ইসরায়েলের বিমান বাহিনীর গোলায় ইরানের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় ‘সীমিত’ ক্ষয়ক্ষতি হলেও অধিকাংশ গোলা লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার আগেই ব্যর্থ করে দেওয়ার দাবি করেছে ইরান। শনিবার দেশটির বিমান বাহিনী এক বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে এ তথ্য।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাজধানী তেহরান, খুজেস্তান ও ইলাম প্রদেশের সামরিক স্থাপনাগুলোতে হাশলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। হামলার শিকার স্থাপনাগুলোতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখতে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে বলেও উল্লেক করা হয়েছে ইরানের বিমানবাহিনীর বিবৃতিতে।
বিজ্ঞাপন
শনিবার ভোররাতের দিকে তেহরান, খুজেস্তান এবং ইলামের সামরিক ঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা হামলা শুরু করে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী। গত ০১ অক্টোবর ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে যে ব্যাপক আকারের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছিল ইরান, তার জবাব দিতেই এ হামলা পরিচালনা করা হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ।
বিবৃতিতে আইডিএফ আরও বলেছে, “এটি পুরোপুরি পরিকল্পিত এবং সুনির্দিষ্ট একটি অভিযান। এ অভিযানে শুধু ইরানের সামরিক স্থাপনাগুলোতে হামলা করা হবে। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা এবং তেল খনিগুলো হামলার আওতার বাইরে থাকবে।”
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলের ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালানোর পর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। এ অভিযানের মূল লক্ষ্য হামাসের কব্জায় থাকা জিম্মিদের উদ্ধার করা এবং গোষ্ঠীটিকে অকার্যকর করা।
গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে গাজায় অভিযান পরিচালনা করছে ইসরায়েলি সেনারা। সেই সঙ্গে গত সেপ্টেম্বর থেকে হামাসের মিত্র ও লেবাননভিত্তিক সশস্ত্র ইসলামি গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধেও অভিযান শুরু করেছে আইডিএফ।
লেবানের অভিযান শুরুর পর ইসরায়েলকে সতর্কবার্তা দিতে গত ১ অক্টোবর রাতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইসরায়েল। ওই রাতে ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে প্রায় ২০০ ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল ইরানের সামরিক বাহিনীর এলিট শাখা ইসলামিক রেভোল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি)।
তবে অ্যান্টি মিসাইল সিস্টেমের মাধ্যমে ইরানের অধিকাংশ ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার আগেই ধ্বংস করে ফেলতে পেরেছিল আইডিএফ। তাই ১ অক্টোবরের হামলায় তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি ইসরায়েলের।
হামলার পরের দিন ২ অক্টোবর জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেন, ইরানকে এ হামলার জবাব দেবে ইসরায়েল। অন্যদিকে ৩ অক্টোবর ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান কাতারে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মত বিনিময় সভায় বলেন, ইসরায়েল যদি গাজা এবং লেবাননে সামরিক অভিযান বন্ধ না করে, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে ফের এ ধরনের হামলা হবে।
উভয়পক্ষের এই পাল্টাপাল্টি অবস্থানের জেরে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ও যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। এই আশঙ্কার মধ্যেই আজকের হামলা চালাল ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী।
সূত্র : তেহরান টাইমস
এসএমডব্লিউ