রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে অর্থ সরানোর দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত এবং পরে রাজার হস্তক্ষেপে দণ্ডাদেশ থেকে অব্যহতি পাওয়া মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। সেই সঙ্গে দাবি করেছেন, দুর্নীতির যে অভিযোগে তাকে সাজা দেওয়া হয়েছিল, সেটির ‘মাস্টারমাইন্ড’ তিনি ছিলেন না।

বৃহস্পতিবার এক লিখিত বিবৃতির মাধ্যমে ক্ষমাপ্রার্থনা করেছেন নাজিব। রাজধানী কুয়ালালামপুরের আদালত এলাকায় বিবৃতিটি পাঠ করেছেন তার ছেলে মোহাম্মদ নিজার।

বিবৃতিতে নাজিব রাজাক বলেন, “আমি দেশের প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকার সময় ১এমডিবি (মালয়েশিয়ার) তছনছ হয়েছিল— এটা আমাকে খুব পীড়া দেয়। মালয়েশিয়ার জনগণের কাছে আমি হাতজোড় করে ক্ষমা চাইছি।”

“আপনারা জানেন, এ ঘটনার জন্য আমি কারাবাসের সাজা পেয়েছিলাম, রাজনীতিতেও নিষেধাজ্ঞা পেয়েছি; কিন্তু আজ পরিষ্কারভাবে বলছি যে এ ঘটনার মাস্টারমাইন্ড আমি ছিলাম না। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার।”

নাজিব মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকার সময় ২০০৯ সালে দেশটির প্রধান উন্নয়ন তহবিল ওয়ান মালয়েশিয়া ডেভেলপমেন্ট বেরহাদ (ওয়ান এমডিবি) থেকে ৪৫০ কোটি টাকা খোয়া যায়। পরে তদন্তে এ ঘটনার সঙ্গে নাজিবের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হওয়ার পর অপরাধজনিত বিশ্বাসভঙ্গ, ক্ষমতার অপব্যবহার ও মুদ্রাপাচারের অভিযোগে মামলা হয় তার বিরুদ্ধে।

২০২০ সালে মামলার রায় দেন মালয়েশিয়ার নিম্ন আদালত। সেই রায়ে নাজিবকে ১২ বছরের কারাদণ্ড এবং ২১ কোটি রিংগিত (৪৪৭ কোটি ৭২ লাখ টাকা) জরিমানা করা হয়।

নিম্ন আদালত রায় ঘোষণার তা বাতিল চেয়ে পর প্রথমে উচ্চ আদালত ও তারপর সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন নাজিবের আইনজীবীরা। তবে দু’ই আদালতই নিম্ন আদালতের রায় বহাল রেখে রায় দেন।

সুপ্রিম কোর্ট রায় ঘোষণার পর শেষ চেষ্টা হিসেবে চলতি বছর জানুয়ারিতে মালয়েশিয়ার রাজার কাছে ক্ষমাভিক্ষা চেয়ে আবেদন করেন নাজিব রাজাক। রাজার নেতৃত্বাধীন যে উচ্চপর্যায়ের পরিষদ রয়েছে, সেটিতে রয়েছেন দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল এবং অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তারা। এ বোর্ড মূলত রাজাকে পরামর্শ দিয়ে থাকে। এই বোর্ডের কাছে ক্ষমা চেয়ে আবেদন কনে মালয়েশিয়র সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। রাজকীয় বোর্ড এখনও সিদ্ধান্ত জানায়নি।

সূত্র : দ্য স্ট্রেইট টাইমস

এসএমডব্লিউ