নতুন প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করতে চলেছে যুক্তরাজ্য ও জার্মানি। ব্রিটিশ সরকার এই চুক্তিকে নিরাপত্তা, বিনিয়োগ এবং চাকরি বাড়ানোর লক্ষ্যে একটি “ল্যান্ডমার্ক প্রতিরক্ষা চুক্তি” হিসেবে অভিহিত করেছে।

চুক্তির অধীনে জার্মান প্রতিরক্ষা সংস্থা রাইনমেটাল আর্টিলারি বন্দুকের জন্য ব্যারেল তৈরি করতে যুক্তরাজ্যে একটি নতুন কারখানা খুলবে। বুধবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাজ্য যাচ্ছেন জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

সেখানে দুই দেশের নতুন প্রতিরক্ষা চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন তিনি। বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উভয় দেশই নতুন দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন তৈরিতে একসঙ্গে কাজ করবে। জার্মান সামুদ্রিক নজরদারি বিমানগুলোও পর্যায়ক্রমে স্কটল্যান্ডের আরএএফ লসিমাউথ থেকে উত্তর আটলান্টিকে টহল চালাবে।

মূলত জার্মানি ও যুক্তরাজ্য দুই দেশই সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য দেশ। দুই দেশই প্রতিরক্ষাখাতে প্রচুর অর্থ ব্যয় করে থাকে। তাদের মধ্যে নতুন ‘ট্রিনিটি হাউস চুক্তি’ প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে দুই দেশের সহযোগিতা আরও বাড়াবে।

জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস ও এবং যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জন হিলি গত জুলাইতে বার্লিনে এই চুক্তি নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। এবার তারা সেই চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের দুই বছর পর এবং যুক্তরাজ্যে সরকার পরিবর্তনের কয়েক মাসের মধ্যে এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই এই চুক্তি সেরে ফেলছে জার্মানি ও যুক্তরাজ্য। ইউরোপে ন্যাটোর শরিক দেশগুলোও এই চুক্তির ওপর খুবই আগ্রহ নিয়ে নজর রাখছে।

জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, এই চুক্তির ফলে ইউরোপে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত ফাঁক বন্ধ করা সম্ভব হবে। তিনি জার্মানি থেকে যুক্তরাজ্যে যাওয়ার আগে জানিয়েছেন, পানি, স্থল, আকাশ ও সাইবার দুনিয়ায় যৌথ প্রকল্প নিয়ে আমরা আমাদের প্রতিরক্ষা ক্ষমতা আরও বাড়িয়ে নিতে পারব। এর ফলে ন্যাটো এবং ইউরোপ শক্তিশালী হবে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর আমরা ইউরোপের নিরাপত্তাকে অবহেলা করতে পারি না বলেও জানিয়েছেন তিনি।

অন্যদিকে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিলি বলেছেন, যে চুক্তি সই হতে যাচ্ছে তা জার্মানির সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্কের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা ঘটনা। এটা ইউরোপের নিরাপত্তাও বাড়াবে।

তিনি জানিয়েছেন, এই চুক্তিতে অস্ত্র উৎপাদনের ক্ষেত্রেও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার কথা বলা হয়েছে। জার্মানির সেনাবাহিনীর সঙ্গে যে সহযোগিতার কথা বলা হয়েছে তা অভূতপূর্ব। এর ফলে দুই দেশের নীতি রক্ষিত হবে এবং প্রতিরক্ষা শিল্পের উন্নতি হবে।

চুক্তির অধীনে জার্মানির অস্ত্র প্রস্তুতকারক রাইনমেটাল যুক্তরাজ্যে একটা নতুন কারখানা খুলবে, সেখানে ৪০০ জনের চাকরির সুযোগ হবে।

টিএম