যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ৬ লাখ ছাড়িয়েছে। প্রাণঘাতী এই রোগে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে এ মারা গেছেন ৬ লাখ ১৪৭ জন। বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্ত, মৃত্যু ও সেরে ওঠা রোগীদের হালনাগাদ সংখ্যা প্রদানকারী ওয়েবসাইট করোনাভাইরাস ওয়ার্ল্ডোমিটারে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

২০২০ সালে করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে ওই বছরের মাঝামাঝি সময়েই এ রোগে আক্রান্ত ও মৃতের হিসেবে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। দেশজুড়ে ব্যাপক টিকাকরণ ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপের পর সম্প্রতি দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমে এলেও এখন পর্যন্ত করোনায় মোট আক্রান্ত ও মৃত্যুর হিসেবে শীর্ষে আছে যুক্তরাষ্ট্র। মহামারি শুরুর পর থেকে দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৩ কোটি ৩৭ লাখ ১৫ হাজার ৯৫১ জন।

অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যাও যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি। ওয়ার্ল্ডোমিটারের চার্ট বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে করোনায় সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৫৯ লাখ ৭৯ হাজার ৭৮৪ জন।

করোনায় মৃত্যুর হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের পরেই আছে ব্রাজিল। দক্ষিণ আমেরিকার বৃহত্তম এই দেশটিতে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৪ লাখ ৩৫ হাজার ৮২৩ জনে। দেশটিতে বর্তমানে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ১০ লাখ ৯৪ হাজার ৩৬৫ জন। মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ব্রাজিলে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ৫৬ লাখ ২৭ হাজার ৪৭৫ জন।

করোনায় দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর হিসেবে বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে বর্তমানে শীর্ষে অবস্থানে থাকা ভারত মহামারি শুরুর পর থেকে এ রোগে মোট আক্রান্তের হিসেবে দ্বিতীয় ও মৃত্যুর হিসেবে তৃতীয় স্থানে আছে। দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ কোটি ৪৯ লাখ ৬৪ হাজার ৯২৫, মারা গেছেন মোট ২ লাখ ৭৪ হাজার ৪১১ জন। দেশটিতে বর্তমানে সক্রিয় করোনা রোগী আছেন ৩৫ লাখ ২২ হাজার ৯০৫ জন।

গত দেড় বছরে মহমারিতে মোট আক্রান্তের হিসেবে তৃতীয় ও মৃত্যুর তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে থাকা দেশের নাম মেক্সিকো। এ পর্যন্ত মেক্সিকোতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ২ কোটি ৩৮ লাখ ৬৯০ জন, মারা গেছেন মোট ২ লাখ ২০ হাজার ৩৮০ জন। মেক্সিকোতে বর্তমানে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ২ লাখ ৬০ হাজার ৫৬৮ জন।

করোনাভাইরাস ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাস ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১৬ কোটি ৩৭ লাখ ৬ হাজার ১২১ জন। মারা গেছেন মোট ৩৩ লাখ ৯২ হাজার ৮৭৪ জন।

এর মধ্যে রোববার বিশ্বজুগে করেনায় নতুন আক্রান্ত রোগীর তালিকায় নাম লিখিয়েছেন ৫ লাখ ৩২ হাজার ৫৬০ জন, মারা গেছেন ৯ হাজার ৫০৯ জন। বর্তমানে বিশ্বে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৮১ লাখ ৫৫ হাজার ১০১ জন।

অবশ্য প্রাণঘাতী ভাইরাসটির সঙ্গে লড়াই করে সুস্থ হয়ে ওঠার হারও কম নয়। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৪ কোটি ২১ লাখ ৫৮  হাজার ১৪৬ জন।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে প্রথম শনাক্ত হয় প্রাণঘাতী সার্স-কোভ-২ ভাইরাস, যা বিশ্বে সাধারণভাবে পরিচিতি পায় করোনাভাইরাস নামে। শনাক্ত হওয়ার তিন মাসের মধ্যে বিশ্বজুড়ে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ে এই ভাইরাসটি।

যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ যদিও অভিযোগ করে আসছে, চীনের গবেষণাগারে এই ভাইরাসটি কৃত্রিমভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে, তবে চীন বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে, প্রাকৃতিকভাবেই আবির্ভাব ঘটেছে সার্স-কোভ-২ ভাইরাসটির।

গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে। ২০২০ সালের প্রথম সাত-আট মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যাপক আক্রান্ত ও মৃত্যুর পর ওই বছরের শেষ দিকে কিছুটা কমে এসেছিল করোনা সংক্রমণ। এর মধ্যে বিভিন্ন কোম্পানির করোনা প্রতিরোধী টিকা বাজারে এসে যাওয়ায় গণটিকাদান কর্মসূচিও শুরু করেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।

তবে গত মার্চ থেকে বিভিন্ন দেশে, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে ফের ব্যাপকভাবে বাড়তে শুরু করেছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ পার করছে দক্ষিণ এশিয়া।

এসএমডব্লিউ