ইলিরান মিজরাহি, ৪০ বছর বয়সী ইসরায়েলি রিজার্ভ সেনা। গত বছর গাজায় স্থল হামলা চালাতে যান তিনি। দীর্ঘ ছয় মাস পর আহত হয়ে গাজা থেকে ফিরে আসেন। কিন্তু এরপরই মানসিক সমস্যায় ভোগা শুরু করেন। যা প্রকট আকার ধারণ করে। মানসিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে গত মে মাসে আত্মহত্যা করে বসেন তিনি।

এই সেনার পরিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে জানিয়েছে, গাজা থেকে ফেরার পর তিনি অন্যরকম হয়ে যান। গাজার যে বর্বরতা তিনি দেখেছেন সেটি নিতে পারছিলেন না। এ কারণে নিজেকে শেষ করে দিয়েছেন তিনি। তার মা বলেছেন, “সে গাজা থেকে বের হয়েছিল। কিন্তু গাজা তার থেকে বের হয়নি। যুদ্ধ পরবর্তী ট্রমার কারণে সে মারা গেছে।”

ইলিরান মিজরাহি একা নয়, গাজায় যুদ্ধ করতে গিয়ে নিজেদের চালানো বর্বরতা দেখে ‘পাগল’ হয়ে গেছেন হাজার হাজার সেনা। তাদেরকে মানসিকভাবে সহায়তা করার চেষ্টা করছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। তবে এমন মানসিক যন্ত্রণায় ভুগে কত সেনা আত্মহত্যা করেছে সেটি স্পষ্ট করেনি দখলদার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। তারা মূলত এ ধরনের ঘটনা চাপিয়ে রাখে।

সিএনএন জানিয়েছে, ইলিরান মিজরাহি সেনাবাহিনীর ৬২ টন ওজনের বুলডোজার চালাতেন। যেটি বিস্ফোরক ও গুলি প্রতিরোধী।

এই সেনা আত্মহত্যা করার পর তার বেশ কিছু ছবি ভাইরাল হয়। যেগুলোতে দেখা যায় তিনি গাজায় বুলডোজার দিয়ে ঘরবাড়ি ধ্বংস করছেন। এসব ছবি ছড়িয়ে পড়ার পর অনেকে তাকে হত্যাকারী হিসেবে অভিহিত করেন।

ইলিরান মিজরাহির মা জানিয়েছেন, তার ধারণা তার ছেলে হয়ত গাজায় কাউকে হত্যা করেছিল। কিন্তু এ বিষয়টি সে নিতে পারেনি। এ কারণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে এবং সবশেষে আত্মহত্যা করেন।

তার মা আরও জানিয়েছেন, গাজা থেকে ফেরার পর প্রচণ্ড রাগ, ঘাম, ঘুম না ধরা এবং নিজেকে গুটিয়ে রাখাসহ বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি।

গাজায় বর্বরতা চালানোর পর এখন লেবাননে একই কাজ করছে দখলদার ইসরায়েল। একজন সেনা জানিয়েছেন,  লেবাননে যুদ্ধ করার জন্য তালিকাবদ্ধ হতে পারেন এমন আশঙ্কায় তারা অনেকে ভয়ে আছেন। তিনি জানিয়েছেন, অনেকেই লেবাননে যুদ্ধ করতে যেতে চান না এবং নেতানিয়াহুর সরকারকেও বিশ্বাস করেন না।

দখলদারদের হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত ৪৩ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। আর এত এত বেসামরিক মানুষের মৃত্যু দেখে ইসরায়েলি সেনারা এমন মানসিক বিপর্যয়ে পড়েছেন।

প্রতিবেদনটি সংক্ষেপে করা হয়েছে

সূত্র: সিএনএন

এমটিআই