কর্ণাটকের হাইকোর্ট (ফাইল ছবি)

মসজিদের ভেতরে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিলে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে না বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কর্ণাটকের হাইকোর্ট।

একইসঙ্গে মসজিদে এই স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে পুলিশের দায়ের করা ফৌজদারি মামলাও বাতিল করে দিয়েছে আদালত। বুধবার (১৬ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মসজিদের ভেতরে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে পুলিশের দায়ের করা ফৌজদারি মামলা বাতিল করে দিয়েছে কর্ণাটক হাইকোর্ট। মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত মামলায় বিচারপতি এম নাগপ্রসন্নের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ উল্লেখ করে, ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান তোলা কীভাবে কোনও সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে তা তার বোধগম্য নয়।  

অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে একটি মসজিদে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৫এ ধারার অধীনে অভিযোগ আনা হয়েছিল। একইসঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির (আইপিসি) ৪৪৭ ধারা (ফৌজদারী অনুপ্রবেশ), ৫০৫ (জনসাধারণের দুর্নাম ঘটানোর মতো বিবৃতি), ৫০৬ (অপরাধী ভীতি প্রদর্শন), ৩৪ (সাধারণ উদ্দেশ্য) এবং ২৯৫এ (ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত) এর অধীনেও মামলা করা হয়েছিল।

কর্ণাটক হাইকোর্টের এই বেঞ্চ উল্লেখ করেছে, মামলার অভিযোগকারী নিজেই বলেছেন— হিন্দু ও মুসলমানরা সংশ্লিষ্ট এলাকায় সম্প্রীতির সাথে বসবাস করছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আরও কার্যক্রম চালানোর অনুমতি দেওয়া হলে তা আইনি প্রক্রিয়ার অপব্যবহার হয়ে উঠবে।

সুপ্রিম কোর্টের আদেশের কথা উল্লেখ করে কর্ণাটক হাইকোর্টের এই বেঞ্চ বলেছে, যেকোনও কাজই আইপিসির ২৯৫এ ধারার অধীনে অপরাধ হয়ে উঠবে না।

পুলিশ জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে একটি মসজিদের ভেতরে ঢুকে জয় শ্রীরাম স্লোগান দিয়েছিল অভিযুক্তরা। হুমকি দেওয়ার অভিযোগও উঠেছিল তাদের বিরুদ্ধে। এরপরই তাদের হেফাজতে নেয় পুলিশ এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয় তাদের বিরুদ্ধে।

পরে অভিযুক্তরা তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোকে চ্যালেঞ্জ করে কর্ণাটক হাইকোর্টে একটি আপিল করে। তারই শুনানিতে এসব অভিযোগ নাকচ করল আদালত।

কর্ণাটক আদালত রায় দেওয়ার সময়ে উল্লেখ করেছে, মামলার অভিযোগকারী নিজেই বলেছেন— হিন্দু ও মুসলমানরা সংশ্লিষ্ট এলাকায় সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাস করছে। সেক্ষেত্রে জয় শ্রীরামে সমস্যা কোথায়? অভিযুক্তদের শাস্তির পক্ষে কথা বললে, তা আইনের অপব্যবহার করা হয়।

টিএম