ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ (ফাইল ছবি)

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর এটা অবশ্যই ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে, জাতিসংঘের একটি সিদ্ধান্তের মাধ্যমেই তার দেশ (ইসরায়েল) সৃষ্টি হয়েছিল।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্বরত শান্তিরক্ষীদের ওপর ইসরায়েলের গোলাবর্ষণের নিন্দাও জানিয়েছেন ফরাসি এই প্রেসিডেন্ট। ফরাসি মিডিয়া রিপোর্টের বরাত দিয়ে বুধবার (১৬ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ মঙ্গলবার বলেছেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু অবশ্যই ভুলে যাবেন না যে তার দেশ জাতিসংঘের একটি সিদ্ধান্তের মাধ্যমেই তৈরি হয়েছিল।

এলিসিতে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকের সময় প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ ১৯৪৭ সালের নভেম্বরে ফিলিস্তিনকে একটি ইহুদি রাষ্ট্র এবং একটি আরব রাষ্ট্রে বিভক্ত করার বিষয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক গৃহীত একটি প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করে এই মন্তব্য করেন।

প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ এর আগে গাজা এবং লেবাননে আগ্রাসনের জন্য ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানি বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, এখন জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করার সময় নয়।

আন্তর্জাতিক ক্ষোভ এবং যুদ্ধবিরতির আহ্বান সত্ত্বেও ইসরায়েল গাজা এবং লেবাননে তাদের আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে ভূখণ্ডটির ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।

এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে ৪২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার পাশাপাশি প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

অন্যদিকে দক্ষিণ লেবাননে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের ওপর ইসরায়েলি হামলার নিন্দাও জানিয়েছে ফ্রান্স।

অবশ্য ম্যাক্রোঁর মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় নেতানিয়াহুর কার্যালয় একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। সেখানে তারা বলেছে, জাতিসংঘের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে নয় বরং “স্বাধীনতা যুদ্ধের” মাধ্যমে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে নেতানিয়াহুর কার্যালয় বলেছে, “ফরাসি প্রেসিডেন্টর কাছে একটি অনুস্মারক: জাতিসংঘের সিদ্ধান্তে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয়নি, বরং স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের বীর যোদ্ধাদের রক্ত ​​দিয়ে এই বিজয় অর্জিত হয়েছিল।”

এতে আরও বলা হয়েছে, “সাম্প্রতিক দশকগুলোতে ইসরায়েল রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে শত শত ইহুদি-বিরোধী সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে জাতিসংঘ। যার উদ্দেশ্য হলো কেবলমাত্র ইহুদি রাষ্ট্রের অস্তিত্বের অধিকার এবং আত্মরক্ষা করার ক্ষমতাকে অস্বীকার করা।”

টিএম