মঙ্গলবার নতুন করে ইসরায়েলি বিমান হামলার পর বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলিতে ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে

গত এক বছর ধরে বর্বর ও নির্বিচার হামলা চালিয়ে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে দখলদার ইসরায়েল। আর গত দুই সপ্তাহ ধরে লেবাননেও একই ধরনের বর্বরতা শুরু করেছে দেশটি।

এমন অবস্থায় লেবাননকে ‘গাজার মতো’ ধ্বংসযজ্ঞের মুখোমুখি হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। এছাড়া শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর নিহত প্রধান সাইয়্যেদ হাসান নাসরাল্লাহর দুই উত্তরসূরিকে হত্যার দাবিও করেছেন তিনি।

বুধবার (৯ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লেবানন ‘গাজার মতো’ ধ্বংসযজ্ঞের মুখোমুখি হতে পারে বলে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সতর্ক করেছেন। একইসঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, ইসরায়েল নিহত হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহর উত্তরসূরি এবং “উত্তরসূরির উত্তরসূরিকে” (রিপ্লেসমেন্ট অব দ্য রিপ্লেসমেন্ট) হত্যা করেছে। 

মঙ্গলবার লেবাননের নাগরিকদের উদ্দেশে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় নেতানিয়াহু এসব কথা বলেন। সেখানে তিনি আরও দাবি করেছেন, “আজ অনেক, বহু বছরের পর হিজবুল্লাহ দুর্বল অবস্থায় রয়েছে।”

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এর আগে বলেছিল, তারা গত সপ্তাহে বৈরুতে একটি বিমান হামলায় শীর্ষ হিজবুল্লাহ কমান্ডার হাশেম সাফিউদ্দীনকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। তিনি হাসান নাসারাল্লাহর উত্তরসূরি হিসেবে পরিচিত ছিলেন, কিন্তু তার ভাগ্য এখনও অজানা।

এছাড়া নেতানিয়াহুর সর্বশেষ মন্তব্য সম্পর্কে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে এখনও কোনও মন্তব্য করা হয়নি।

গাজায় এক বছর ধরে রক্তাক্ত ও নিরলস ইসরায়েলি হামলার বিষয়ে উল্লেখ করে মঙ্গলবারের ভিডিওবার্তায় নেতানিয়াহু বলেন, “লেবাননকে একটি দীর্ঘ যুদ্ধের অতল গহ্বরে পতিত হওয়ার আগে আপনাদের কাছে একটি সুযোগ আছে। কারণ এই যুদ্ধ লেবাননকে ধ্বংস এবং দুর্ভোগের দিকে নিয়ে যাবে যেমনটি আমরা গাজায় দেখছি।”

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গাজার ওপর ইসরায়েলের অব্যাহত আক্রমণ এই অঞ্চলটিকে ধ্বংস করে দিয়েছে এবং এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৪১ হাজার ৯৬৫ জন নিহত হয়েছেন এবং গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার প্রায় সবাই অন্তত একবার তাদের ঘরবাড়ি থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

এদিকে নেতানিয়াহুর পক্ষ থেকে লেবাননকে এই কঠোর সতর্কতা এমন এক সময়ে দেওয়া হলো যখন ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দেশটিতে আরও সৈন্য মোতায়েন করেছে এবং দক্ষিণ উপকূলীয় অঞ্চলে এবং রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলির অঞ্চল থেকে লোকজনকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

হিজবুল্লাহ এর আগে বলেছিল, তারা ইসরায়েলের বন্দর শহর হাইফাতে রকেট নিক্ষেপ করেছে। এই এলাকায় এটিই তাদের সবচেয়ে বড় রকেট হামলা। এর আগে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী লেবানন থেকে ৮৫টি প্রজেক্টাইল নিক্ষেপের খবর দিয়েছিল।

মূলত হিজবুল্লাহর সাথে গোলা বিনিময় শুরু করার প্রায় এক বছর পর লেবাননে আগ্রাসন ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে ইসরায়েল। লেবাননের সশস্ত্র এই গোষ্ঠীটি বলেছে, তাদের হামলা মূলত গাজায় ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে।

তবে ইসরায়েল লেবাননের সাথে তার উত্তর সীমান্ত সুরক্ষিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যাতে কয়েক হাজার ইসরায়েলি সেখানে শহর ও বসতিতে ফিরে যেতে পারে।

টিএম