২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে যে হামলা চালিয়েছিল গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র ইসলামি গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা, তাকে ‘মহিমান্বিত’ বলে উল্লেখ করেছে গোষ্ঠীটির শীর্ষ নেতৃত্ব। ৭ অক্টোবরের হামলা এবং তার ফলশ্রুতিতে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান ভয়াবহ অভিযানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে দেওয়া এক ভিডিওবার্তায় এ ইস্যুতে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে গোষ্ঠীটি।

ভিডিওবার্তায় কথা বলেছেন হামাসের জ্যেষ্ঠ মুখপাত্র খলিল আল হায়া। তিনি বলেছেন, “শত্রুরা পুরো বিশ্বের সামনে এমন একটি বিভ্রম সৃষ্টি করেছিল যে শ্রেষ্ঠত্ব এবং সক্ষমতায় তারা অদ্বিতীয়। তাদের সেই বিভ্রম ভেঙে দিয়েছে গত ৭ অক্টোবরের হামলা। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলা এ কারণেই মহিমান্বিত।”

“ফিলিস্তিনের জনগন, বিশেষ করে গাজায় বসবাসরত ফিলিস্তিনিনা তাদের প্রতিরোধ, দৃঢ়তা এবং রক্ত দিয়ে নতুন ইতিহাস রচনা করছেন।”

হামাসের শীর্ষ নেতৃত্বের সবাই গত প্রায় এক যুগ ধরে কাতারে বসবাস করছেন। খলিল আল হায়াও কাতার থেকেই দিয়েছেন ভিডিওবার্তাটি। গত ৩১ জুলাই এক আততায়ীর হামলায় হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া নিহত হওয়ার পর থেকে গোষ্ঠীটিতে গুরুত্ব বেড়েছে হায়ার।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে হামলা চালিয়ে দেশটির ভূখণ্ডে প্রবেশ করে হামাস এবং তাদের মিত্র গোষ্ঠী প্যালেস্টাইনিয়ান ইসলামিক জিহাদের (পিআইজে) অন্তত এক হাজার সশস্ত্র যোদ্ধা। সেখানে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০৫ জনকে হত্যা করে তারা। নিহতদের অধিকাংশই বেসামরিক। সেইসঙ্গে জিম্মি হিসেবে ২৪২ জনকে ধরে নিয়ে যায় যোদ্ধারা। এই জিম্মিদেরও বড় অংশ বেসামরিক।

বস্তুত ১৯৪৭ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলা ছিল রাষ্ট্রটির ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা। হামাসের সেই হামলার জবাব দিতে এবং জিম্মিদের উদ্ধার করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী, যা এখনও চলছে। গত এক বছরে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে গাজায় নিহত হয়েছেন প্রায় ৪২ হাজার ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরও প্রায় এক লাখ।

গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে মধ্যস্থতা করে আসছে কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে একটি একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য উভয়পক্ষকে রাজি করাতে বিস্তর চেষ্টাও করা হয়েছে। কিন্তু হামাস এবং ইসরায়েল— কোনো পক্ষই স্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য প্রয়োজনীয় শর্তগুলো মেনে চলতে সম্মত হয়নি।

সূত্র : এএফপি

এসএমডব্লিউ