গোলাগুলির পর অস্ত্রহাতে ইসরায়েলের বর্ডার পুলিশ

ইসরাইলের রাজধানী তেল আবিবের কাছে জাফায় গোলাগুলিতে কয়েকজন সেনা গুরুতর আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা। ইসরায়েলি সেনা সূত্রে এ খবর দিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি। 

ইসরায়েলি পুলিশ এর আগে জানিয়েছিল জাফার এই গোলাগুলিতে অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন এবং সাতজন আহত হয়েছেন। 

ইসরায়েলি সেনা বলছে আহত সেনাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তবে নিহতদের মধ্যে কোনো সেনাসদস্য রয়েছে কি না তা এখনও স্পষ্ট নয় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে। 

গতকাল রাতে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। এরই মধ্যে দেশটিতে এই গোলাগুলির খবর পাওয়া গেল। তবে কাদের সাথে এই গোলাগুলি হয়েছে সে বিষয়েও এখনও বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। 

ইসরায়েলে হামলা চালানো হলেও ক্ষেপণাস্ত্রের কিছু অংশ পড়েছে জর্ডানেও।  জর্ডানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাজধানী আম্মানসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ক্ষেপণাস্ত্রের কিছু অংশ পড়েছে।  

জর্ডানের বালকাতে পড়া মিসাইলের একটি অংশ

ক্ষেপণাস্ত্র এবং ধ্বংসাবশেষ পড়ে তিনজন সামান্য আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির একজন মন্ত্রী মোহাম্মদ আল-মোমেনি। 

রাষ্ট্রীয় মিডিয়ায় সম্প্রচারিত বিভিন্ন প্রতিবেদনে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র দেখা গেছে বলে জানিয়েছে সিএনএন। আম্মানের উত্তর-পশ্চিমে বালকা গভর্নরেট থেকে একটি লাইভ প্রতিবেদনে একজন সাংবাদিক জানান, সেখানে ২ মিটার লম্বা ক্ষেপণাস্ত্রের একটি টুকরো এসে পড়েছে। 

 জর্ডানের সামরিক বাহিনী দেশের জনগণকে  বাড়িতে থাকতে এবং তার সব বাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে বলেছে। সিএনএন বলছে, জর্ডানের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জর্ডানের আকাশসীমায় ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকানো হয়েছে। 

এর আগে এপ্রিলের ১৩ তারিখে ইরান যে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল তখনও সেগুলো ঠেকিয়ে দিয়েছিল জর্ডান। 

তেহরানে উৎসব
ইসরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর তেহরানের রাস্তায় উদযাপন করতে দেখা গেছে বহু মানুষকে। ইরান এবং হিজবুল্লাহর পতাকা হাতে বহু মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন। শুক্রবার লেবাননে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হিজবুল্লাহ নেতার ছবিও ছিল অনেকের হাতে। 

ব্রিটিশ দূতাবাসের সামনে মূলত এই জমায়েত হয়। এর আগে এপ্রিলে ইসরায়েলে ইরানের হামলার পরও এই একই স্থানে জমায়েত লক্ষ্য করা যায়। 

গতকাল মঙ্গলবার ইসরায়েলের বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ২০০টি মিসাইল ছুড়েছে ইরান। সম্প্রতি হামাস, হিজবুল্লাহ এবং ইরানের সিনিয়র কমান্ডারদের হত্যার জবাবে এই মিসাইল হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরানের রেভ্যুলশনারি গার্ড। তারা বলছে, ইসরায়েল যদি এই হামলার জবাব দেয় তবে আরও হামলা চালানো হবে। 

শনিবারই ইরানের সর্বোচ্চ নেতা অঙ্গীকার করেছিলেন যে তাদের মিত্র, হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহকে হত্যার প্রতিশোধ নেওয়া হবে। 

গতকাল ইরান যে হামলা চালিয়েছে তার অন্যতম লক্ষ্য ছিল ইসরায়েলের নেভাতিম বিমান ঘাঁটি। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন হামলার ভিডিও বিশ্লেষণ করে জানিয়েছে, নেভাতিম ঘাঁটিতে অন্তত কয়েক ডজন মিসাইল ছুড়েছে ইরান। যেগুলো একের পর এক ঘাঁটিতে আঘাত হানতে দেখা গেছে।

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, তারা যে দুটি ভিডিও বিশ্লেষণ করেছে সেগুলোর মধ্যে একটি ধারণ করা হয়েছে আরাত আন-নাকাব শহর থেকে। এটি বিমান ঘাঁটির ঠিক দক্ষিণ দিকে অবস্থিত। ভিডিওতে যেসব ভবন দেখা গেছে; সেগুলোর সঙ্গে পুরোনো ছবির সাদৃশ্য খুঁজে পেয়ে সিএনএন নিশ্চিত করেছে, ভিডিওটি ঘাঁটির পাশ থেকেই ধারণ করা হয়েছে। 

এনএফ