স্ত্রী অসুস্থ। সপ্তাহে তিন দিন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। কিন্তু বাধ সেধেছে বৃষ্টি। রাস্তায় জমে থাকা পানি পেরিয়ে কী ভাবে হাসপাতালে নিয়ে যাবেন তাকে? উপায়ান্তর না দেখে পঞ্চাশোর্ধ্ব স্ত্রীকে কোলে তুলে নিলেন স্বামী।

এরপর পানি পেরিয়ে সে ভাবেই স্ত্রী নিয়ে গেলেন হাসপাতাল পর্যন্ত। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশের গোন্ডা জেলায়। শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

এদিকে এই ঘটনার ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর অভ্যন্তরীণ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কেন ওই ব্যক্তি তার অসুস্থ স্ত্রীর জন্য হুইলচেয়ার বা স্ট্রেচার পেলেন না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এছাড়া ওই ব্যক্তিকে হুইলচেয়ার বা স্ট্রেচার দেওয়া হয়নি বলে যে অভিযোগ উঠেছে সেটিও অস্বীকার করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে কোলে তুলে নিয়ে হাঁটছেন। রাস্তায় পানি জমে রয়েছে। আর তার মধ্যেই হাঁটু পর্যন্ত প্যান্ট গুটিয়ে নিয়ে হাঁটছেন তিনি। এসময় তার পা কিছুটা ডুবে যেতেও দেখা যায় এবং সেভাবেই তিনি তার স্ত্রীকে কোলে নিয়ে হাঁটছেন। এসময় স্ত্রীও তার স্বামীকে আঁকড়ে ধরে ছিলেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, শনিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে। ওই ব্যক্তির স্ত্রীর ডায়ালিসিসের চিকিৎসা চলছে। সপ্তাহে তিন দিন করে সরকারি হাসপাতালে তাকে নিয়ে যেতে হয়। শনিবার বৃষ্টির কারণে রাস্তায় পানি জমে যায়। চেষ্টা করেও তিনি হুইলচেয়ার বা স্ট্রেচারের ব্যবস্থা করতে পারেননি বলে অভিযোগ রয়েছে। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

গোন্ডা মেডিকেল কলেজের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আদিত্য বর্মা বলেন, “আমরা ওই ব্যক্তিের সঙ্গে কথা বলেছি। জানতে পেরেছি, ডায়ালিসিস চিকিৎসার জন্য তিনি স্ত্রীকে নিয়ে সপ্তাহে তিন দিন করে আমাদের হাসপাতালে আসেন। তিনি কখনোই হুইলচেয়ার বা স্ট্রেচার চাননি। আমরা অভ্যন্তরীণ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। কেউ দোষী হলে তার শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।”

উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন এলাকায় গত কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টি চলছে। একাধিক জেলায় বন্যা পরিস্থিতিও তৈরি হয়েছে। গোন্ডা তার মধ্যে অন্যতম। এছাড়া, লখিমপুর খেরি, বহরাইচ, ফারুকাবাদ, বালিয়া, গোরখপুর, অযোধ্যার মতো জেলাও বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

এনডিটিভি বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের এই রাজ্যে ৪.১ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে করে রাজ্যটির ২৪টি জেলা বন্যা পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে বলেও জানা গেছে।

টিএম