ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ (ফাইল ছবি)

লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলের ব্যাপক বিমান হামলায় শত শত মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। এই হামলাকে গত বিশ বছরের মধ্যে প্রাণহানির দিক থেকে সবচেয়ে সংঘাতময় বলা হচ্ছে।

বর্বর এই হামলা এখনও অব্যাহত রয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। এমন অবস্থায় লেবাননে চলমান এই সংঘাত নিয়ে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তিনি বলেছেন, লেবানন ‘নতুন আরেকটি গাজা’ হয়ে উঠতে পারে না।

এছাড়া ইসরায়েলকে অবশ্যই লেবাননে তাদের হামলা বন্ধ করতে হবে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সাথে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বলেন, “ইসরায়েলকে অবশ্যই তাদের হামলা বন্ধ করতে হবে এবং হিজবুল্লাহকেও অবশ্যই তার প্রতিশোধ নেওয়া বন্ধ করতে হবে।”

কানাডায় তার সফরের সময় ম্যাক্রোঁ বলেন, লেবাননের “নতুন গাজা হয়ে ওঠার” বিরোধিতা করে ফ্রান্স। গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের হতাহতের “অতিশয় বেদনাদায়ক” সংখ্যা উল্লেখ করে তিনি একথা বলেন।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স এবং বেশ কয়েকটি আরব ও ইউরোপীয় দেশ জাতিসংঘে তীব্র আলোচনার পর ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তে অবিলম্বে ২১ দিনের অস্ত্রবিরতির আহ্বান জানিয়েছে। তবে অস্ত্রবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে লেবাননে হিজবুল্লাহর অবস্থান লক্ষ্য করে সর্বশক্তি দিয়ে হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন দখলদার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজও পরবর্তীতে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে জানান, “দক্ষিণে (লেবাননে) কোনও ধরনের অস্ত্রবিরতি হবে না। বিজয়ের আগ পর্যন্ত সর্বশক্তি দিয়ে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে হামলা অব্যাহত রাখব আমরা। যেন উত্তরের বাসিন্দারা নিরাপদে তাদের বাড়িতে ফিরতে পারেন।”

ইসরায়েলের দাবি, সীমান্তে নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনতে হিজবুল্লাহর ওপর হামলার প্রয়োজন রয়েছে। তবে বিশ্লেষকরা ইঙ্গিত করছেন তিনটি কারণের দিকে। এক বছর আগে লেবাননের ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ উত্তর ইসরায়েলের সীমান্ত এলাকায় গোলাবর্ষণ শুরু করলে প্রায় ৬০ হাজার ইসরায়েলি নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যান।

যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানিসহ বেশ কয়েকটি দেশ হিজবুল্লাহকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে তালিকাভুক্ত করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন হিজবুল্লাহর সশস্ত্র শাখাকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। হিজবুল্লাহর দাবি, গাজার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাসের সমর্থনে তারা ইসরায়েলে রকেট হামলা চালাচ্ছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধে অন্তত ৪১ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

টিএম