আগামী মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামায় অ্যালান ইগুইন মিলার নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে। এতে ব্যবহার করা হবে নাইট্রোজেন গ্যাস।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, দুই বছর আগে ইগুইন মিলারের দণ্ড কার্যকরে একবার চেষ্টা চালানো হয়। ওই সময় তার শিরায় বিষাক্ত ইনজেকশন পুশ করে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু সঠিক সময়ের মধ্যে শিরা খুঁজে না পাওয়ায় সেবার তিনি বেঁচে যান।

কিন্তু এবার যে নাইট্রোজেন গ্যাস প্রয়োগের মাধ্যমে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার কথা চলছে সেটি খুবই ‘ভয়ংকর’ একটি পদ্ধতি।

এর আগে আলাবামায় চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি কেনেথ স্মিথ নামের একজনের একই পদ্ধতিতে দণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল তিনি মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে মৃত্যুবরণ করবেন। কিন্তু তার মৃত্যু হয়েছিল দীর্ঘ ২৫ মিনিট সময় নিয়ে।

এই দণ্ড কার্যকরে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে একটি স্ট্রেচারে শোয়ানো হয়। এরপর তার মুখে নাইট্রোজেনের মাস্ক লাগিয়ে দেওয়া হয়। যেটি শুয়ে নেওয়ার মাধ্যমে মৃত্যু হয়।

কেনেথ স্মিথের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর ও তার মৃত্যু কীভাবে হয়েছে সেটি দেখেছিলেন পাঁচজন সাংবাদিক। তাদের দণ্ড কার্যকরের স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে ওই সময় জানিয়েছিলেন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

ওই সাংবাদিকদের একজন হলেন লি হেডগেপেথ। তিনি বলেছিলেন, যেই বিশেষ খাটে স্মিথকে শোয়ানো হয়েছিল, সেটিতে প্রচন্ড ছটফট করেছেন তিনি এবং সবমিলিয়ে দণ্ড কার্যকরে ২৫ মিনিট সময় লেগেছে।

তিনি আরও জানান, যখন মুখে নাইট্রোজেন গ্যাসের মাস্ক পরানো হয় তখন স্মিথ উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আলাবামা আজ মানবতাকে এক ধাপ পেছনে নিয়ে গেছে। আমাকে সমর্থন করার জন্য ধন্যবাদ। সবাইকে ভালোবাসি।’

যখন মাস্কের মাধ্যমে নাইট্রোজেন গ্যাস তার মুখে প্রবেশ করা শুরু করে তখন স্মিথ হাসেন এবং তার পরিবারের সদস্যদের দিকে তাকিয়ে ভালোবাসার চিহ্ন দেখান বলে জানান এই সাংবাদিক।

সাংবাদিক লি হেডগেপেথ বিবিসিকে বলেন, ‘আমি এর আগে আরও চারটি মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে উপস্থিত ছিলাম। কিন্তু নাইট্রোজেন গ্যাসের প্রভাবে স্মিথ যেভাবে ছটফট করেছে; এ রকমটি কখনো দেখিনি। সে অক্সিজেনের জন্য অব্যাহতভাবে হাঁসফাস করছিল এবং দণ্ড কার্যকরে ২৫ মিনিট সময় লেগেছে।’

অক্সিজেন ছাড়া নাইট্রোজেন গ্যাস শুষে নিলে এটি দেহের কোষগুলো ভেঙে ফেলে এবং পরিশেষে মৃত্যু হয়।

আলাবামা রাজ্যের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, নাইট্রোজেন গ্যাস শুষে নিলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে স্মিথ জ্ঞান হারাবেন এবং কয়েক মিনিটের মধ্যে তার মৃত্যু হবে। তবে তাদের সেই ধারণার তুলনায় সময় অনেক বেশি লেগেছে এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত অক্সিজেনের জন্য তিনি ছটফট করেছেন।