লেবাননে স্থল হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল। এমনটাই জানিয়েছেন ইসরায়েলের সামরিক প্রধান হারজি হালেভি। এছাড়া ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, তারা দুই ব্রিগেড রিজার্ভ সৈন্যকে ডেকেছে।

অন্যদিকে লেবাননে ইসরায়েলের মারাত্মক বিমান হামলা তৃতীয় দিনের মতো অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

এদিকে লেবাননে ইসরায়েলের সর্বশেষ হামলায় বুধবার আরও ৭২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৪০০ মানুষ। এতে করে গত কয়েকদিনে লেবাননে ইসরায়েলের হামলায় নিহতের সংখ্যা ৬২০ ছাড়িয়ে গেল।

আল জাজিরা বলছে, গত সোমবার থেকে লোবনেন নাটকীয়ভাবে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এই হামলা এখনও অব্যাহত রয়েছে এবং এর মধ্যেই বুধবার উত্তর ইসরায়েলে সৈন্যদের উদ্দেশ্যে ইসরায়েলের সামরিক প্রধান হারজি হালেভি বলেছেন, সর্বশেষ এই বিমান হামলার লক্ষ্য হচ্ছে “(লেবাননে) আপনাদের সম্ভাব্য প্রবেশের জন্য স্থল প্রস্তুত করা”।

মূলত এর মাধ্যমে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে ইসরায়েলি বাহিনীর সম্ভাব্য স্থল অভিযানের কথা সবচেয়ে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করলেন তিনি।

হালেভি বলেন, “আমরা একটি কৌশলের প্রক্রিয়া তৈরি করছি, যার অর্থ আপনার সামরিক বুট, আপনার কৌশলী বুট, শত্রু অঞ্চলে প্রবেশ করবে, হিজবুল্লাহ বড় সামরিক ঘাঁটি হিসেবে প্রস্তুত করা গ্রামগুলোতেও প্রবেশ করবে।”

হিজবুল্লাহর ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, হিজবুল্লাহ “তার হামলার পরিসর আরও প্রসারিত করেছে এবং আজকের পরে তারা আরও শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া পাবে। নিজেদের প্রস্তুত কর।”

প্রসঙ্গত, তেল আবিবের কাছে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সদর দপ্তর লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে হিজবুল্লাহ। সেটিকে ইঙ্গিত করেই তিনি একথা বলেন।

এর আগে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছিল, তারা হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে এবং উত্তর ইসরায়েলে বাস্তুচ্যুত হাজার হাজার বেসামরিক লোকের তাদের ঘরবাড়িতে ফিরে যাওয়ার সুযোগ দেওয়ার জন্য উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তে রিজার্ভ সৈন্যদের দুটি ব্রিগেডকে ডাকছে।

এদিকে বুধবার এক সংক্ষিপ্ত ভিডিও বার্তায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বাস্তুচ্যুত ইসরায়েলিদের তাদের ঘরবাড়িতে ফিরে যেতে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পুনরাবৃত্তি করেছেন এবং বলেছেন, হিজবুল্লাহ “কল্পনা করার চেয়েও কঠিন” আঘাত পাচ্ছে।

তিনি বলেন, “আমরা যা করি সে সম্পর্কে আমি বিস্তারিতভাবে বলতে পারি না। তবে আমি আপনাকে একটি জিনিস বলতে পারি: আমরা উত্তরে আমাদের বাসিন্দাদের নিরাপদে তাদের বাড়িতে ফিরিয়ে দিতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।”

এর আগে বুধবার হিজবুল্লাহ ইসরায়েলে কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে, যার মধ্যে একটি দূর-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রও রয়েছে। যার ফলে তেল আবিবে এবং ইসরায়েলের অন্যান্য অংশজুড়ে বিমান হামলার সাইরেন বাজানো হয়।

ইসরায়েল বলেছে, প্রথমবারের মতো একটি ক্ষেপণাস্ত্র দেশের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে পৌঁছেছে এবং ক্ষেপণাস্ত্রটি আটকে দেওয়া হয়েছে। তবে এতে কোনো হতাহতের বা ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি বলেও দাবি করা হয়েছে।

অন্যদিকে হিজবুল্লাহ বলেছে, তারা ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সদর দপ্তরে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, কারণ এই সংস্থা তাদের সিনিয়র নেতাদের ওপর হামলা ও হত্যার জন্য দায়ী।

যদিও ইসরায়েল পরে দাবি করেছে, দক্ষিণ লেবাননের যে জায়গা থেকে ক্ষেপণাস্ত্রটি উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল সেখানে তারা হামলা করেছে।

টিএম