যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের বিরুদ্ধে পার্লামেন্ট অবমাননার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার দেশটির পার্লামেন্ট কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক পার্লামেন্টারি কমিটি হাউস স্পিকার বরাবর এ ইস্যুতে চিঠি দিয়েছেন।

হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের আসনে রয়েছে রিপাবলিক পার্টি। ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা ব্লিংকেনের বিরুদ্ধে পার্লামেন্ট অবমাননার অভিযোগ আনা হবে কি না— ইস্যুতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ল বিষয়ক কমিটির সদস্যদের মধ্যে ভোট হয়। ভোট শেষে দেখা যায়, ২৬ জন সদস্য ব্লিংকেনকে পার্লামেন্ট অবমাননার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করার পক্ষে এবং ২৫ জন বিপক্ষে।

২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন এবং ন্যাটো সেনা প্রত্যাহার করে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। রিপাবলিকান পার্টির অভিযোগ, এক্ষেত্রে কোনো গোছানো পরিকল্পনা ব্লিংকেন কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ছিল না। যদি পরিকল্পনামাফিক কাজটি করা হতো, তাহলে আফগানিস্তানে তালেবান বাহিনীর ফের উত্থান এত সহজে ঘটত না।

হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে ইতোমধ্যে এ অভিযোগের ওপর শুনানি শুরু হয়েছে। গতকাল সোমবার সেই শুনানিতে উপস্থিত থাকার জন্য ব্লিংকেনকে সমনও পাঠিয়েছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক কমিটি। কিন্তু তার আগের দিন রোববার কমিটির চেয়ারম্যান এবং হাউসের রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা মাইকেল ম্যাককাউলকে চিঠি দেন ব্লিংকেন। সেখানে বলেন যে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সম্মেলনকে ঘিরে এই মুহূর্তে তিনি খুবই ব্যস্ত; তাই সোমবার তার পক্ষে শুনানিতে হাজিরা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। চিঠিতে এ কারণে দুঃখও প্রকাশ করেছেন তিনি।

ওই চিঠি পাওয়ার পরই ব্লিংকেনের বিরুদ্ধে পার্লামেন্ট অবমাননার প্রস্তাব আনা হয়ে। সোমবার সেই প্রস্তাবের ওপরে ভোট হয়েছে। ভোটের আগে পার্লামেন্টে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মাইকেল ম্যাককাউল বলেন, “আমি এর আগেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। তাকে অনুরোধ জানিয়ে বলেছিলাম—সেপ্টেম্বর মাসের যে কোনো দিন দু-তিন ঘণ্টার জন্য যদি তিনি কংগ্রেসে উপস্থিত থাকতে পারেন, তাহলেই হবে; কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে তিনি এই পুরো সেপ্টেম্বর মাসের একটি দিনের মাত্র দু’টি ঘণ্টা কংগ্রেসকে দিতে ব্যর্থ হলেন।”

এদিকে ব্লিংকেনের বিরুদ্ধে পার্লামেন্ট অবমাননার অভিযোগের এক প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, “এটি পুরোপুরি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তাকে (ব্লিংকেন) এর আগে একবার শুনানিতে হাজির থাকার জন্য বলা হয়েছিল, এবং তিনি উপস্থিত ছিলেন। এবারও তিনি উপস্থিত থাকতেন, যদি জাতিসংঘের অধিবেশনের সূচি না থাকতো। এই অধিবেশন যে কতখানি গুরুত্বপূর্ণ, তা যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যেক শিক্ষিত-সচেতন মানুষ জানেন।”

সূত্র : রয়টার্স

এসএমডব্লিউ