খাবার, পানি ও নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে প্রায় প্রতিদিন আমাদের দেহে প্রবেশ করছে মাইক্রোপ্লাস্টিক; রক্তের মাধ্যমে পরিবাহিত হয়ে তা জমা হচ্ছে ফুসফুস, হৃৎপিণ্ড, পাকস্থলিসহ দেহের অভ্যন্তরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রতঙ্গে।

তবে মাইক্রোপ্লাস্টিকের এই ভয়াবহ অনুপ্রবেশ কেবল এসবেই থেমে নেই। মানুষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ মস্তিষ্কেও ঢুকে পড়ছে এই চরম ক্ষতিকারক বস্তু। ব্রাজিলে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এর প্রমাণ পাওয়া গেছে।

ব্রাজিলের বৃহত্তম শহর সাও পাওলো শহরে অবস্থিত সাও পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের একটি দল ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের মে পর্যন্ত ১৫ জন স্বেচ্ছাসেবীকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ এবং তাদের ওপর বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান পরিচালনা করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। ১৫ জনের মধ্যে ৮ জনের মস্তিষ্কে ১৬ ধরনের ‘সিনথেটিক পলিমার পার্টিকেলস’ শনাক্ত হয়েছে। এসব পার্টিকেল বা অতিক্ষুদ্র প্লাস্টিক বস্তুকণার আয়তন দশমিক ০০৫৫ মিলিমিটার থেকে দশমিক ০২৫ মিলিমিটারের মধ্যে। সবচেয়ে বেশি যে ধরনের প্লাস্টিকের কণা পাওয়া গেছে, সেটির নাম পলিপ্রোপাইলেন।

গবেষণা প্রবন্ধে সাও পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আটজনের মস্তিষ্কের ওলফ্যাক্টোরি বাল্ব অঞ্চলে শনাক্ত হয়েছে মাইক্রোপ্লাস্টিকের কণা। মস্তিষ্কের এই অংশটি মানুষের ঘ্রাণ ইন্দ্রিয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত।

প্রসঙ্গত, ব্রাজিলে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লেট, গ্লাস, কাপের পাশাপাশি বিভিন্ন খাদ্যপণ্য প্যাকেটজাত করতে পলিপ্রোপাইলেনের ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। গবেষকরা ধারণা করছেন, নিঃশ্বাসের মাধ্যমে এসব প্লাস্টিকের কণা আক্রান্তদের মস্তিষ্কে প্রবেশ করেছে।

গবেষক দলের প্রধান ড. থাইস মাউয়াদ যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজকে বলেন, “মানব মস্তিষ্কের ভেতর মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব থাকা খুবই বড় একটি বিপদ। কারণ এসব কণা একদিকে যেমন মস্তিষ্কে দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ এবং কার্যকারিতা নষ্ট করে, অন্যদিকে মস্তিষ্কে ক্যানসারের আশঙ্কাকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে তোলে।”

সূত্র : আরটি।

এসএমডব্লিউ