দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ দেশ ভারত। বড় দেশ হওয়ায় প্রতিবেশীর উপর প্রভাব বিস্তার করতে চায় তারা। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রচেষ্টায় বড় ধাক্কা খেয়েছে নয়াদিল্লি। যার সর্বশেষ উদাহরণ হলো বাংলাদেশ। সাবেক স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমে বাংলাদেশে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করছিল দেশটি। কিন্তু ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মুখে শেখ হাসিনার পতন হলে বাংলাদেশের উপর ভারতের প্রভাব হঠাৎ করেই ‘ভ্যানিশ’ হয়ে গেছে।

এছাড়া নেপালেও নতুন করে আবার ক্ষমতায় এসেছেন কেপি শর্মা ওলি। যিনি ঘোর ভারত বিরোধী এবং চীনপন্থি হিসেবে পরিচিত।

আরেক প্রতিবেশী মালদ্বীপও ভারতের হাতছাড়া হয়ে গেছে। ২০২৩ সালে দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট হন মোহাম্মদ মুইজ্জু। চীনপন্থি এ রাজনীতিবিদ ক্ষমতায় এসেই মালদ্বীপ থেকে প্রথমে ভারতীয় সেনাদের প্রত্যাহার করেন। যদিও দেশটিতে ভারতের হাতে গোণা কয়েকজন সেনা ছিলেন। কিন্তু তাদের প্রত্যাহার করতে বাধ্য করে মুইজ্জু বার্তা দিয়েছেন তিনি ভারতের আধিপত্যের বিরুদ্ধে থাকবেন।

আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে প্রভাব হারানো ছাড়াও ঘরের ভেতরও নানান সমস্যায় রয়েছে ভারত। মাত্র এক সপ্তাহ আগে দেশটির সেভেন সিস্টার্সের মণিপুর রাজ্যে অস্থিতিশীলতা দেখা দেয়। সেখানে হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতে এবং খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী কুকিদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।

এই সংঘর্ষে রকেট, ড্রোনসহ অত্যাধুনিক অস্ত্রের ব্যবহার দেখা যায়। যা চিন্তিত করে তোলে স্থানীয় প্রশাসনকে।

মণিপুর নিয়ে যখন ভারতে উত্তেজনা চলছিল তখন আবার খবর আসে তাদের অরুণাচল প্রদেশের ৬০ কিলোমিটার অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছে চীনের সেনারা। এমনকি চীনারা সেখানে একটি ক্যাম্পও স্থাপন করেছে।

এছাড়া জম্মু ও কাশ্মিরে স্বাধীনতাপন্থি সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে প্রায়ই ভারতীয় সেনাদের সংঘর্ষ হচ্ছে। এতে সেনাদের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। গতকাল শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) কাশ্মিরে দুই ভারতীয় সেনা প্রাণ হারান। গত কয়েক মাস এমন সংঘর্ষ কম থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে এটি আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে।

এছাড়া ভারতের পশ্চিমবঙ্গে চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় প্রায় এক মাস ধরে চলছে জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলন। এতে করে সেখানকার চিকিৎসা সেবা ব্যহত হয়ে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি আন্দোলন থামানোর চেষ্টা করলেও এখনো তিনি সফল হননি।

এমটিআই