ফাইল ছবি

গত কয়েক বছর ধরে প্রতিবছরই দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে ভারতে পাঠানো হতো বাংলাদেশের ইলিশ। কিন্তু টানা দেড় দশক ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সেই ধারাবাহিকতা বজায় না থাকার বিষয়টি এবার অনেকটাই নিশ্চিত।

ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এবার ইলিশ দেওয়া হবে না বলে ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ইলিশ পাঠানোর আবদার করে বাংলাদেশের কাছে যে চিঠি দেশটির ফিস ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন পাঠিয়েছিল, সেটিরও কোনো জবাব পায়নি তারা।

এমন অবস্থায় আসন্ন দুর্গাপূজায় বাংলাদেশের ইলিশ পাওয়া নিয়ে কোনো আশা দেখছেন না ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কালকাতার ব্যবসায়ীরা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে এমনই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।

কলকাতার সংবাদমাধ্যম বলছে, হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক আবহেও বদল এসেছে। বদলেছে ভারত-বাংলাদেশে সীমান্তভিত্তিক আমদানি-রপ্তানির ছবি। প্রতি বছর পূজার সময় ইলিশ আসে বাংলাদেশ থেকে। উপহার হিসাবেই বাংলাদেশ থেকে এই আসত ভারতে।

তবে এ বছর সেই ইলিশ আসার সম্ভাবনা খুবই কম। আর তাই কলকাতার হাওড়া পাইকারি মাছ বাজারের ব্যবসায়ীরা অন্তত খুব একটা আশার আলো দেখছেন না।

একটা সময় ভারতে বাংলাদেশের ইলিশ যাওয়ার ক্ষেত্রে তেমন কোনও কড়াকড়ি ছিল না। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে পদ্মার ইলিশের জন্য মুখিয়ে থাকত পশ্চিমবঙ্গের মানুষ। তবে ২০১২ সাল থেকে ছবিটা বদলায়। সেসময় তৎকালীন শেখ হাসিনা সরকার ভারতে ইলিশ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

ধীরে ধীরে পশ্চিমবঙ্গে পদ্মার ইলিশ রপ্তানি কার্যত বন্ধই ছিল। ২০১৮ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যিক চুক্তির ফলে ফের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে ইলিশ পাঠাতে রাজি হন।

সেই থেকে প্রতি বছর দুর্গাপূজার আগে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশ সরকার এক মাসের জন্য ৫০০০ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানির অনুমতি দিতো। মৎস্য ব্যবসায়ীদের কথায়, মাসে গড়ে ১০০০ থেকে ১২০০ মেট্রিক টন ইলিশ আমদানি করতে পারতেন তারা। খাতা-কলমে অবশ্য এটিকে ‘পূজার উপহার’ হিসাবে তুলে ধরা হতো।

ছাত্র-জনতার ব্যাপক গণআন্দোলনের মুখে হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশে অন্তবর্তী সরকার ক্ষমতায় রয়েছে। ভারতের ফিশ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠিও লিখেছে।

তবে গত ৯ সেপ্টেম্বর এই চিঠি লেখা হলেও এখনও পর্যন্ত কোনো উত্তর তারা পায়নি।

ফিশ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের হাওড়া শাখার সেক্রেটারি সৈয়দ আনোয়ার মকসুদ বলেন, তারা ফের চিঠি দিয়ে বাংলাদেশ সরকারকে ইলিশ মাছ পাঠানোর জন্য অনুরোধ করবেন।

তবে সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পদ্মার ইলিশ এবার আদৌ আসবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। ফলে এবার আর পদ্মার ইলিশে পাতে নেওয়ার সুযোগ হবে বলে মনে হয় না।

সূত্র: টিভি নাইন

টিএম