ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় মণিপুর রাজ্যে হিন্দু সংখ্যাগুরু মেইতেই সম্প্রদায়ের সাথে কুকিদের সংঘাতের মাঝেই দেশটির সাবেক এক সেনা সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সোমবার সকালের দিকে মণিপুরের একটি বাফার জোনে নিজের গাড়ির ভেতর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি ভুলেই ওই বাফার জোনে ঢুকে পড়েছিলেন। পরে উত্তেজিত একদল জনতা তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে দেশটির সংবাদমাধ্যম টাইমস নাউ জানিয়েছে।

টাইমস নাউয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহত ব্যক্তির নাম লালবই মেইতে। তিনি মণিপুরের ক্যাংপোকপি জেলার মোতবাং এলাকার বাসিন্দা। ভারতীয় সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সৈন্য ছিলেন তিনি। সোমবার সকালের দিকে ইম্ফল পশ্চিম জেলার সেকমাই এলাকায় তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।

পরে স্থানীয়রা তার মরদেহ শনাক্ত করেন এবং পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সাবেক ওই সেনাসদস্যের মরদেহ উদ্ধার করেছে। এই ঘটনায় স্থানীয় থানায় ভুক্তভোগীর পরিবার এফআইআর দায়ের করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মণিপুর পুলিশের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াকে (পিটিআই) বলেছেন, সাবেক ওই সেনাসদস্য অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এই ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে।
 
গত বছরের মে মাসে মণিপুরের সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতে সম্প্রদায় এবং কুকি-জো উপজাতিদের মধ্যে সহিংসতা শুরু হয়। ওই সহিংসতায় দুই শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ও প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। এরপর রাজ্যজুড়ে থেমে থেমে সহিংসতা চললেও এই প্রথমবারের মতো চলমান জাতিগত সংঘাতে ড্রোন ও রকেট ব্যবহার করে হামলা চালানো হয়েছে। এমনকি বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সদস্যরা রাইফেল এবং গ্রেনেডেরও ব্যবহার করছে। গত কয়েক দিনের সহিংসতায় দেশটির এই রাজ্যে কমপক্ষে আটজন নিহত ও এক ডজনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

মণিপুর পুলিশ বলেছে, যেকোনও ধরনের দুর্বৃত্ত ড্রোনের হামলার চেষ্টা নস্যাৎ করে দিতে অ্যান্টি-ড্রোন ব্যবস্থা মোতায়েন করেছে আসাম রাইফেলস। এছাড়া রাজ্য পুলিশের কাছে একটি অ্যান্টি-ড্রোন ব্যবস্থা হস্তান্তর করেছে কেন্দ্রীয় আধা-সামরিক বাহিনী (সিআরপিএফ)।

এসএস