ফাইল ছবি

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে সর্বাত্মক আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। এরপর আড়াই বছরেরও বেশি সময় ধরে এই সংঘাত চলছে। হাজারও মানুষের প্রাণহানি হলেও সংঘাত বন্ধের কোনও আভাস এখনও নেই।

অন্যদিকে রুশ এই আগ্রাসন মোকাবিলায় নিজেদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পশ্চিমা সহায়তায় পুষ্ট ইউক্রেন। সম্প্রতি ইউক্রেনীয় বাহিনী রাশিয়ার অভ্যন্তরেও হামলা বাড়িয়েছে। এমন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে দিয়েছে রাশিয়া।

দেশটি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, ইউক্রেন ইস্যুতে ‘রেড লাইন’ অতিক্রম করবেন না। শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনে চলমান সংঘাতে রাশিয়ার ‘রেড লাইন’ অতিক্রম না করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে দিয়েছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, মস্কোর সাথে নিজের পারস্পরিক সংযমের বোধ হারাতে শুরু করেছে ওয়াশিংটন।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বার্তাসংস্থা একথা জানিয়েছে। গত বুধবার এক সাক্ষাৎকারে ল্যাভরভ বলেন, ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে আমেরিকানরা ‘তাদের নিজস্ব রেড লাইন অতিক্রম করেছে’।

বার্তাসংস্থার রিপোর্টে তাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ‘তাদের (যুক্তরাষ্ট্র) বোঝা উচিত, আমাদের রেড লাইনগুলো বোকা বানানোর মতো কিছু নয়। এবং তারা খুব ভালো করেই জানে, তারা কোথায় আছে।’

ল্যাভরভ আরও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার সাথে পারস্পরিক সংযমের বোধ হারাতে শুরু করেছে এবং এটিকে তিনি ‘বিপজ্জনক’ বলে অভিহিত করেছেন।

তিনি বলেছেন, ‘(মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন) কিরবি বলেছেন– ইউক্রেনের জন্য সমর্থন বাড়ানোর বিষয়টিকে সাবধানতার সাথে বিবেচনা করা উচিত যাতে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধকে উস্কে দেওয়া না হয়। কারণ সংঘাত বা যুদ্ধ ইউরোপে পৌঁছে যাওয়াটা দেখা হবে দুঃখজনক।

ল্যাভরভ বলেন, তিনি আশা করেন ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহের সম্ভাব্য পরিণতি উপলব্ধি করবে ওয়াশিংটন। তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত যে, সেখানে উল্লেখযোগ্য প্রভাবসম্পন্ন যুক্তিবোধ সম্পন্ন লোক রয়েছে। এবং আমি আশা করি, মার্কিন স্বার্থ বিবেচনায় নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ২০২২ সালে রুশ সেনাবাহিনীকে ইউক্রেনে পাঠিয়ে আগ্রাসন শুরু করেন। তিনি এই যুদ্ধকে পশ্চিমের সাথে পূর্বের ঐতিহাসিক সংগ্রামের অংশ হিসাবে চিহ্নিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর রাশিয়াকে অপমানিত করা হয়েছে।

ইউক্রেন এবং পশ্চিমারা বলছে, (যুদ্ধের নামে) পুতিন সাম্রাজ্যিক ধাঁচে ভূখণ্ড দখলে নিয়োজিত রয়েছেন। তারা রাশিয়াকে পরাজিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যদিও বর্তমানে ক্রিমিয়াসহ ইউক্রেনের প্রায় ১৮ শতাংশ এবং পূর্ব ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলের কিছু অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে রাশিয়া।

রাশিয়া বলেছে, একসময় রাশিয়ান সাম্রাজ্যের অংশ থাকা এসব ভূখণ্ড এখন আবার রাশিয়ার অংশ হয়েছে এবং এগুলো আর কখনোই ফেরত দেওয়া হবে না।

টিএম