আগামী ২০২৫ সালে জাতীয় নির্বাচন হবে মিয়ানমারে। সেই নির্বাচনের জন্য জনশুমারি ও ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার ঘোষণা দিয়েছেন ক্ষমতাসীন সামারিক সরকারের প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং।

রোববার সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন জেনারেল হ্লেইং। বৈঠক শেষে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে তিনি বলেন, আগামী ১ থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত মিয়ানমারজুড়ে চলবে জনশুমারি ও ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ।

“আমাদের লক্ষ্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহনের ভিত্তিতে একটি অবাধ ও সুষ্টু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচনকে স্বচ্ছ এবং গ্রহণযোগ্য করার জন্য জনসংখ্যা ও ভোটার তালিকা হালনাগাদ থাকা প্রয়োজন। আমরা নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যেই কাজটি শেষ করতে পারব বলে প্রত্যাশা করছি।”

এর আগে গত ১৭ জুন সামরিক বাহিনীর একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মিয়ানমারের মান্দালয় শহরে গিয়েছিলেন তিনি। সেই অনুষ্ঠানে ২০২৫ সালে জাতীয় নির্বাচন হবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি।

২০১৯ সালের জাতীয় নির্বাচনে ভূমিধস জয় পেয়ে সরকার গঠন করেছিল অং সান সু’চির রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। কিন্তু সেই নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে— অভিযোগ তুলে ২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। জেনারেল মিন অং হ্লেইং সেই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ক্ষমতা দখলের পর গঠিত সামরিক সরকারের প্রধানও হন তিনি।

এদিকে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক শাসনের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন দেশটির জনগণের একটি বড় অংশ, নতুন করে সক্রিয় হওয়া শুরু করে জান্তাবিরোধী বিভিন্ন সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠীও। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্যসহ মিয়ানমারের মোট ভূখণ্ডের এক পঞ্চমাংশ নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে বিভিন্ন সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠীর হাতে।

২০২৫ সালে যদি সত্যিই নির্বাচন হয়, তাহলে সেটিকে পশ্চিমা বিশ্ব স্বীকৃতি দেবে— এমন সম্ভাবনা খুব কম। কারণ মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু’চি এখনও কারাবন্দি। তার দল এনএলডিকেও বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে জান্তা।

তবে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই গতমাসে বলেছেন—জনশুমারি, ভোটার তালিকা হালনাগাদ এবং নির্বাচনে মিয়ানমারকে প্রযুক্তিগত ও অন্যান্য লজিস্টিক সমর্থন দেবে বেইজিং।