বন্যায় ভাসছে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাট। পানিতে ডুবে গেছে আহমেদাবাদ, ভাদোদরা, দ্বারকা, জামনগর, মোরবি, সুরেন্দ্র নগর, রাজকোট, জুনাগড়, আমরেলি, ভাবনগরসহ বহু এলাকা।

মানুষের চলাচলের পথ কার্যত নদীতে পরিণত হয়েছে। তবে এই ভয়ঙ্কর বন্যার মধ্যেও থেমে থাকছে না জনজীবন। বেঁচে থাকার জন্য তো খাবার প্রয়োজন। আর তাই হাঁটু-সমান পানি পেরিয়ে খাবার ডেলিভারি করলেন এক ব্যক্তি।

আর এতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘নায়ক’ বনে গেছেন এক ডেলিভারি এজেন্ট। শনিবার (৩১ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ছবি ও ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, হাঁটু-সমান পানি ঠেলেই খাবার ডেলিভারি করতে যাচ্ছেন জ্যোমাটোর এক ডেলিভারি এজেন্ট। ভাইরাল এই ছবিটি গুজরাটের আহমেদাবাদের। এই ছবি সামনে আসতেই ওই ডেলিভারি এজেন্টের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন অনেকে।

কীভাবে দুর্যোগ পেরিয়েও তিনি কর্তব্য পালন করছেন, তার প্রশংসা করছেন সকলে। অনেকেই তাকে ‘সুপারহিরো’ বলেছেন। জ্যোমাটোর সিইও দীপিন্দর গয়ালকে ট্যাগ করে অনেকে আবার লিখেছেন, কর্তব্যপরায়ণতার জন্য ওই ডেলিভারি এজেন্টকে যেন পুরষ্কৃত করা হয়।

ছবিটি দেখে চুপ থাকেনি জ্যোমাটোও। সংস্থার পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘আমাদের ডেলিভারি পার্টনারের অসাধারণ প্রচেষ্টাকে তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ! সত্যিই তারা সাধ্যের বাইরে গিয়ে সুপারহিরোর মতো প্রতিকূল আবহাওয়াতেও কাজ করছেন।’

প্রসঙ্গত, ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে গুজরাট। ভারী বৃষ্টি ও বন্যার কারণে রাজ্যটিতে গত চার দিনে ৩২ জন প্রাণ হারিয়েছে এবং ৩২ হাজারেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

এর মধ্যে বিভিন্ন জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতের খবর পাওয়া গেছে। রাজ্যটির নবসারিতে সর্বোচ্চ ৩৫৬ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া ডাঙ্গ, ভাদোদরা এবং আনন্দেও বৃষ্টি হয়েছে।

দক্ষিণ গুজরাটের ভালসাদ, তাপি, নভসারি, সুরাট, নর্মদা এবং পঞ্চমহল জেলাগুলো এই দুর্যোগে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন এবং কর্মকর্তাদের জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে রাজ্যটিতে কাঠামোগত ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

বৃষ্টি ও বন্যায় কমপক্ষে ৬২টি বাড়ি ধ্বংস হয়েছে এবং আরও ২৭১টি আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ২২টি কুঁড়েঘরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

টিএম