ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রে গরুর মাংস বহন করেছেন সন্দেহে বয়স্ক এক ব্যক্তিকে চলন্ত ট্রেনে উপর্যপুরি চড়-থাপ্পর ‍ও কিল-ঘুষি মারার অভিযোগ উঠেছে। চলন্ত ট্রেনে এই ঘটনা ঘটলেও অনেকে সেখানে নীরব দর্শকের ভূমিকায় ছিলেন। এমনকি ঘটনার সময় সেখানে অনেক লোকজনকে হাসি মুখেও দেখা গেলেও বয়স্ক ব্যক্তির সহায়তায় এগিয়ে আসেননি কেউই। 

এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, প্ল্যাস্টিকের বাক্সে করে গরুর মাংস বহন করছেন সন্দেহে আশরাফ মুনিয়ার নামের বয়স্ক ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন একদল যাত্রী। এ সময় তারা জানতে চান, আপনি বাক্সে করে কী বহন করছেন? কোথায় যাচ্ছেন? আপনি কোথায় থেকে এসেছেন? সেখানে ছাগলের মাংস পাওয়া যায় না? এসব মাংস কতজন মানুষ খাবে?

যাত্রীদের এমন জিজ্ঞাসাবাদ আর চড়-থাপ্পরের সময় ওই ব্যক্তিকে শারীরিকভাবে দুর্বল দেখা যায়। জিজ্ঞাসাবাদের মুখে মাংস মেয়ের পরিবারের জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন বলে জানান।

মহারাষ্ট্রের জলগাঁও জেলার বাসিন্দা আশরাফ মুনিয়ার ঢুলে এক্সপ্রেসে করে মালেগাঁওয়ে মেয়ের বাড়িতে যাওয়ার সময় নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, আশরাফ মুনিয়ার জবাবে সন্তুষ্ট হতে পারেননি জিজ্ঞাসাবাদকারীরা। পরে তারা কয়েক মিনিট ধরে তাকে মাংসের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এ সময় তাকে উপর্যুপরি চড়-থাপ্পরের পাশাপাশি কিল-ঘুষিও মারেন জিজ্ঞাসাবাদকারীরা। এই ঘটনার ভিডিও নিজেদের মোবাইল ফোনেও ধারণ করেন অনেকে। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে আশরাফ মুনিয়া স্বীকার করেন, প্ল্যাস্টিকের বাক্সে মহিষের মাংস রয়েছে।

তার এমন স্বীকারোক্তির জবাবে একজন বলেন, আমরা পরীক্ষা করার পরই এই বিষয়ে জানতে পারব। এখন শ্রাবণ মাস। আমাদের উৎসব চলছে আর আপনি এসব করছেন।

বিশ্বজুড়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে পবিত্র মাসগুলোর একটি হিসাবে বিবেচনা করা হয় শ্রাবণ মাসকে। মহারাষ্ট্র রাজ্যের পশু সংরক্ষণ আইন-১৯৭৬ অনুযায়ী গরু, ষাঁড় এবং বলদ জবাই করা নিষিদ্ধ। তবে মহিষ জবাইয়ে নিষেধাজ্ঞা নেই।

মহারাষ্ট্রের রেলওয়ে কমিশনার চলন্ত ট্রেনে মুসলিম যাত্রীকে মারধরের ঘটনা নিশ্চিত করেছেন। একই সঙ্গে এই বিষয়ে একটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন। রেলওয়ে পুলিশ চলন্ত ট্রেনে যাত্রীকে মারধরকারী অন্য যাত্রীদের খুঁজছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এসএস