পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে সহিংসতার অভিযোগে এক সেখানকার বসতি স্থাপনকারী ইহুদিদের একটি সংস্থা এবং একজন বেসামরিক নিরাপত্তা কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বুধবার মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করা হয়েছে এ তথ্য।

নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়া সংস্থাটির নাম হাশোমের ইয়োশ। এই সংস্থার সদস্যদের দাবি করেন যে হাশোমের ইয়োশ একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং ইসরায়েলের কৃষকদের রক্ষার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এই সংস্থার সব সদস্যদের ওপরই বলবৎ হবে।

আর যে ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে, তার নাম ইয়িতজাক লেভি ফিলান্ত। তিনি পশ্চিম তীরের নাবালুস শহরের দক্ষিণাঞ্চলের একটি আবাসনের নিরাপত্তা কর্মকর্তা।

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “পশ্চিমতীরে ইহুদি বসতকারীদের লাগামহীন সহিংসতা একদিকে সেখানকার জনগণের ভোগান্তি বৃদ্ধি করছে, তেমনি ইসরায়েলের নিরাপত্তা ও মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি-স্থিতিশীলতাকে ঝুঁকিতে ফেলছে।”

“আরও একটি ব্যাপার এখানে উল্লেখ্য যে পশ্চিমতীরকে সহিংসতামুক্ত করার দায়িত্ব ইসরায়েলের সরকারের এবং যুক্তরাষ্ট্র বহুবার ইসরায়েলের সরকারকে এই বিষয়ে সচেতন হওয়ার আহ্ববান জানিয়েছে।”

বিবৃতিতে বলা হয়েছে হাশমোর ইয়োশের সদস্যরা এবং ইয়িতজাক লেভি ফিলান্তের বিরুদ্ধে পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনের মারধর, নির্যাতন, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ এবং বাস্তুচ্যুত করার অভিযোগ রয়েছে। ইসরায়েলের বেশ কয়েকটি স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সরকারের কাছ থেকে নিয়মিত অর্থনৈতিক সহায়তা পেতো হাশমোর ইয়োশ।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ইহুদিদের কাছ থেকেও নিয়মিত চাঁদা নিত হাশমোর ইয়োশ। জে-গিভ নামের একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে চলত এই চাঁদা সংগ্রহ। ওয়েবসাইটিটি ইতোমধ্যে অকার্যকর করে দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে। সেই সঙ্গে মার্কিন ইহুদিদের হাশমোর ইয়োশকে চাঁদা দিতেও নিষেধ করা হয়েছে।

নিষেধাজ্ঞা জারির ফলে হাশমোর ইয়োশ এবং ইয়িতজাক লেভি ফিলান্তের নিজের ও পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্রে সঞ্চিত যাবতীয় অর্থ ও সম্পত্তি ফ্রিজ করা হয়েছে। আদেশ প্রত্যাহারের আগ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশও করতে পারবেন না তারা।

ইসরায়েলের রাজনীতি বিশ্লেষক আকিভা এলদার যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞাকে স্বাগত জানিয়েছেন। এক প্রতিক্রিয়ায় আলজাজিরাকে তিনি বলেন, “এই পদক্ষেপ আরও আগে নেওয়া উচিত ছিল। হাশমোর ইয়োশ একটি কট্টরপন্থি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এবং এই গোষ্ঠীর সদস্যরা সবসময় গণ্ডগোল বাঁধানোর চেষ্টায় থাকে। সুযোগ পেলেই এরা যে কোনো সহিংস ঘটনা ঘটাতে পারে এবং সরকারের কট্টরপন্থী অংশ সবসময় এদের পৃষ্ঠপোষকতা দেয়।”

সূত্র : আলজাজিরা

এসএমডব্লিউ