মুসলিমদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন পোড়ানোর অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে বিচারের কাঠগড়ায় তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপের দেশ সুইডেন। বুধবার দেশটির প্রসিকিউটররা বলেছেন, গত বছরের ধারাবাহিক কয়েকটি ঘটনায় কোরআন পোড়ানোর অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে বিচারের মুখোমুখি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গত বছর দেশটিতে একাধিক কোরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনার পর মুসলিম বিশ্বে ব্যাপক নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। বুধবার এক বিবৃতিতে সুইডিশ প্রসিকিউশন অথরিটি বলেছে, মসজিদের বাইরে এবং অন্যান্য জনসমাগমপূর্ণ স্থানে ইসলামের পবিত্র গ্রন্থ কোরআন পোড়ানোর সময় এই দুই ব্যক্তি চারটি পৃথক কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় তারা জাতিগত বা জাতীয় গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত করেছিলেন।

কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় গত বছর সুইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় সতর্কতা জারি করেছিল। ওই সময় প্রতিবেশি ডেনমার্কেও কোরআন পোড়ানো ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। পরে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার মতো এই ধরনের চর্চা ঠেকাতে ডেনমার্কের সরকার আইন কঠোর করে।

বিবৃতিতে সুইডেনের জ্যেষ্ঠ প্রসিকিউটর আনা হানকিও বলেছেন, ‘‘চারটি অনুষ্ঠানে বিবৃতি দেওয়ার জন্য এবং মুসলমানদের প্রতি অবজ্ঞা প্রকাশ করার উদ্দেশ্যে কোরআনের অবমাননা করায় উভয় ব্যক্তির বিচার করা হবে।’’

প্রমাণ হিসেবে সালওয়ান মোমিকা ও সালওয়ান নাজেম নামের ওই দুই ইরাকি বংশোদ্ভূত অভিবাসীর কোরআন পোড়ানোর ঘটনার ভিডিও রেকর্ড রয়েছে বলে জানিয়েছেন হানকিও। তবে অভিযুক্ত নাজেম কোনও ধরনের অন্যায় করেননি বলে তার আইনজীবী মার্ক সাফারইয়ান জানিয়েছেন। সুইডেনের সংবিধানে তার অধিকারের সুরক্ষা আছে বলে মন্তব্য করেছেন সাফারইয়ান। 

তবে এই বিষয়ে মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করা হলেও মোমিকার আইনজীবীর পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। ইরাকি শরণার্থী মোমিকা বলেছিলেন, তিনি ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে এবং পবিত্র কোরআন নিষিদ্ধের দাবিতে প্রতিবাদ করেছেন।

সুইডেনের অভিবাসনবিষয়ক সংস্থা বলেছে, সুইডেনে বসবাসের অনুমতির জন্য করা আবেদনে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন মোমিকা। যে কারণে তাকে ইরাকে প্রত্যাবাসন করতে চেয়েছিল তারা। কিন্তু দেশটিতে ফেরার পর নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঝুঁকি থাকায় প্রত্যাবাসনের আদেশ কার্যকর করা যায়নি।

এসএস