ফাইল ছবি

ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা প্রায় ১১ মাস ধরে চালানো এই হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৪০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। এমন অবস্থায় মাসখানেক আগে ইরানে নিহত হন হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া।

এই হত্যাকাণ্ডে সন্দেহের তীর ইসরায়েলের দিকে এবং ইরানও এই হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এমন অবস্থায় ইরানের হামলা থেকে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে রক্ষা করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে হোয়াইট হাউস।

এছাড়া ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানি আক্রমণের সম্ভাবনা নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা কঠিন বলেও মন্তব্য করা হয়েছে। বুধবার (২৮ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেকোনও ধরনের ইরানি হামলা থেকে ইসরায়েলকে রক্ষা করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে মন্তব্য করেছেন হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি। এছাড়া গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির ব্যাপারেও যুক্তরাষ্ট্র আশাবাদী বলে মঙ্গলবার জানিয়েছেন তিনি।

কিরবি ইসরায়েলের চ্যানেল ১২কে বলেছেন, তেহরানের আক্রমণের সম্ভাবনা নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা কঠিন কিন্তু ইরানের বক্তব্য-বিবৃতিকে গুরুত্ব সহকারে নিয়ে থাকে হোয়াইট হাউস।

তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, তারা যদি তা করতে চায় তাহলে তারা এখনও আক্রমণ চালাতে প্রস্তুত, যে কারণে আমাদের এই অঞ্চলে বাড়তি সামরিক শক্তি মোতায়েন রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইরানের প্রতি আমাদের বার্তা দৃঢ়, এটি দৃঢ় ছিল এবং থাকবে। প্রথমত, এটা (ইসরায়েলে হামলা) করবেন না। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করার কোনও কারণ নেই। সম্ভাব্য কোনও ধরনের আঞ্চলিক যুদ্ধ শুরু করারও কোনও কারণ নেই। এবং দ্বিতীয়ত, আমরা ইসরায়েলকে রক্ষা করতে প্রস্তুত যদি তাদের ওপর হামলা হয়।’

ইরান হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার কঠোর জবাব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। গত মাসের শেষের দিকে তেহরান সফর করার সময় তিনি হত্যাকাণ্ডের শিকার হন এবং এই ঘটনার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছে ইরান। ইসরায়েল অবশ্য এই ঘটনায় তাদের জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত বা অস্বীকার কোনোটিই করেনি।

এমন অবস্থায় মধ্যপ্রাচ্যে দুটি এয়ারক্রাফ্ট-ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপের পাশাপাশি এফ-২২ ফাইটার জেটের একটি অতিরিক্ত স্কোয়াড্রনও মোতায়েন রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। কিরবি বলেন, আমাদের বাহিনী সেখানে ততক্ষণ থাকবে ‘যতক্ষণ না আমরা মনে করি ইসরায়েলকে রক্ষা করতে এবং এই অঞ্চলে আমাদের নিজস্ব সৈন্য ও স্থাপনাগুলোকে রক্ষা করতে আমাদের সেখানে অবস্থান রাখতে হবে।’

তিনি গাজায় সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়েও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন এবং আগামী দিনে কাতারের রাজধানী দোহাতে আরও আলোচনার অপেক্ষায় থাকার কথা জানিয়েছেন। অবশ্য আলোচনায় অচলাবস্থার জন্য উভয় পক্ষের কাউকেই দায়ী করতে অস্বীকার করেছেন কিরবি।

তিনি বলেছেন, চুক্তির জন্য ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে সমঝোতা ও নেতৃত্বের প্রয়োজন হবে।

কিরবির ভাষায়, ‘দলগুলো এখনও এ বিষয়ে কাজ করছে এবং এটি ভালো জিনিস। আমরা এখন দোহাতে কর্মরত গোষ্ঠীগুলোর সাথে অন্য স্তরে চলে এসেছি, এটি খারাপ কিছু নয়। এর মানে হলো, পক্ষগুলো এখনও কথা বলছে। হামাস এখনও এই ওয়ার্কিং-গ্রুপ আলোচনায় প্রতিনিধিত্ব করছে এবং এটি ভালো বিষয়। কেউই প্রক্রিয়া থেকে সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়নি।’

টিএম