পর্যটন খাতকে চাঙ্গা করতে চীন, ভারত ও রাশিয়াসহ ৩৫টি দেশের নাগরিকদের ভিসা ফি মওকুফের সিদ্ধান্ত নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন মন্ত্রিসভার মুখপাত্র এবং পরিবহনমন্ত্রী বান্দুলা গুণাবর্ধনে।

এই ৩৫টি দেশের তালিকার মধ্যে যে কয়েকটি দেশের নাম গুণাবর্ধনে রয়টার্সকে জানিয়েছেন, সেগুলো হলো— ভারত, চীন, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, স্পেন, অস্ট্রেলিয়া, ডেনমার্ক, পোল্যান্ড, কাজাখস্তান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, জাপান এবং ফ্রান্স।

মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ফি-মুক্ত এই পর্যটন ভিসার মেয়াদ হবে ৩০ দিন। আপাতত ৬ মাসের জন্য এই প্রকল্পটি চালু করা হবে।

রয়টার্সকে গুণাবর্ধনে বলেন, “আমরা শ্রীলঙ্কাকে ভিসা ফ্রি দেশে রূপান্তর করতে চাইছি। আমাদের আগে সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম এই নীতি অনুসরণ করেছে এবং এর ফলে তাদের পর্যটন খাত রীতিমতো ফুলে-ফেঁপে উঠেছে এবং তা অল্পসময়ের মধ্যে। আমাদের এখন এই খাতকে শক্তিশালী করা জরুরি।”

২ কোটি ২০ লাখ মানুষ অধ্যুষিত দেশ শ্রীলঙ্কার মোট আয়তন ৬৫ হাজার ৬১০ দশমিক ২ বর্গকিলোমিটার। ভারত মহাসাগরের তীরবর্তী শ্রীলঙ্কা আসলে একটি বৃহদাকৃতির অখণ্ড দ্বীপ। আকর্ষণীয় সমুদ্র তীর, বিভিন্ন পুরোনো বৌদ্ধ মন্দির নিবিড় অরণ্য-চা বাগান এবং সুগন্ধী চা’য়ের আকর্ষণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতি বছর বিভিন্ন দেশ থেকে শ্রীলঙ্কায় আসেন লাখ লাখ পর্যটক।

২০১৯ সালের ২১ এপ্রিল রাজধানী কলম্বোসহ অন্যান্য শহরের তিনটি গীর্যায় বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। স্থানীয় ইসলামপন্থি জঙ্গিরা সেই হামলার দায় স্বীকার করেছি। ভয়াবহ সেই বিস্ফোরণে শ্রীলঙ্কায় নিহত হয়েছিলেন ১৮৯ জন দেশি-বিদেশি নাগরিক এবং আহত হয়েছিল আরও ৪ শতাধিক।

ওই হামলার পর থেকে ধস নেমেছিল শ্রীলঙ্কার পর্যটন খাতে। তারপর করোনা মহামারির সময় সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া এবং মহামারি পরবর্তী অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা দেশটির পর্যটন খাতকে প্রায় খাদের কিনারায় নিয়ে যায়।

তবে দেশটির অর্থনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থম্ভ হিসেবে পরিচিত এই খাতটি সম্প্রতি ফের ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের আগস্টের মাঝামাঝি থেকে চলতি বছরের আগস্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত দেশটিতে পা রেখেছেন মোট ২০ লাখ ৩০ হাজার বিদেশি পর্যটক।

সূত্র : রয়টার্স

এসএমডব্লিউ