গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালিয়ে যে ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে এনেছিল গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস এবং তার মিত্রগোষ্ঠী প্যালেস্টাইনিয়ান ইসলামিক জিহাদের যোদ্ধারা, সেই জিম্মিদের মধ্যে বর্তমানে হামাসের কব্জায় ৭১ জন জীবিত রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এই জীবিত ৭১ জন জিম্মির মধ্যে ৫৭ জন পুরুষ, ১২ জন নারী এবং এবং ২ জন শিশু রয়েছে। তাদের মধ্যে ৬৪ জন ইসরায়েল, ৬ জন থাইল্যান্ডের এবং ১ জন নেপালের নাগরিক। ৬৪ জন ইসরায়েলি জিম্মির মধ্যে সেনা সদস্যের সংখ্যা ১১ জন।

যে দু’জন শিশু জিম্মি রয়েছে, তাদের নাম কেফির (৮) এবং এরিয়েল (৪)। সম্পর্কে তারা দু’ভাই। তাদের মা শিরি বিবাসও (৩২) রয়েছেন তাদের সঙ্গে। নিজেদের ডাটাবেজের তথ্য বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

২০২০ সালের ৭ অক্টোবর ভোরবেলায় ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালিয়ে সেখানকার ভূখণ্ডে প্রবেশ করে হামাস এবং প্যালেস্টাইনিয়ান ইসলামিক জিহাদের ১ হাজার যোদ্ধা। প্রবেশের পর এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় ২৫১ জনকে। এই জিম্মিদের মধ্যে ইসরায়েলের পাশাপাশি অন্যান্য দেশের নাগরিকরাও ছিলেন।

অতর্কিত এই হামলার জবাব প্রদান এবং জিম্মিদের উদ্ধার করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী, যা এখনও চলছে। সেই অভিযানে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছে ৪০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি।

গত নভেম্বরের শেষ দিকে এক সপ্তাহের জন্য বিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এবং হামাস। এই বিরতির সময় ১০৭ জন জিম্মিকে মুক্তি দেয় গোষ্ঠীটি, অন্যদিকে ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মধ্যে থেকে ১৫০ জনকে ছেড়ে দেয় দেশটির কারা কর্তৃপক্ষ।

আইডিএফের বরাত দিয়ে এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নভেম্বরের বিরতি শেষ হওয়ার পর গত প্রায় ৮ মাসে মাত্র ৬ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। এর বাইরে ৩ জিম্মিকে উদ্ধার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। সেই হিসেবে এ পর্যন্ত মুক্তিপ্রাপ্ত জিম্মির সংখ্যা পৌঁছেছে ১১৬ জনে।

পাশাপাশি এই সময়সীমায় গাজায় অন্তত ৩৪ জন জিম্মি নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে আইডিএফ। তাদের মধ্যে ৩০ জনের দেহ গাজা থেকে ইসরায়েলে আনা সম্ভব হয়েছে।

তবে যে ৭১ জন জিম্মি জীবিত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, সেটি হিসেবভিত্তিক। হামাস এখনও এ সম্পর্কে প্রকাশ্যে কোনো তথ্য জানায়নি। উপরন্তু বিভিন্ন সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে সম্প্রতি জীবিত জিম্মিদের মধ্যে একজনকে গুলি করে হত্যা এবং অপর দু’জনকে আহত করেছে হামাস যোদ্ধার।

গাজায় যুদ্ধাবসানের জন্য ইসরায়েল এবং অন্যান্য মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে যে হামাসের যে আলোচনা চলছে, সেখানে দর কষাকষির ভিত্তি হিসেবে এই জিম্মিদের ব্যবহার করছে হামাস।

সূত্র : এএফপি

এসএমডব্লিউ