ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের রাজধানী কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ফের দেশজুড়ে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির আবাসিক চিকিৎসকরা। বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে ভারতীয় আবাসিক চিকিৎসকদের সংগঠন ফেডারেশন অব রেসিডেন্ট ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন (ফোরডা) এক বিবৃতিতে এই কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে।

এর আগে, গত রোববার ফোরডার এক বিবৃতিতে সোম ও মঙ্গলবার দেশের সব হাসপাতালে কেবল জরুরি চিকিৎসা ছাড়া বাকি সব সেবা বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। পরে বুধবার দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে দাবিপূরণের আশ্বাস পেয়ে প্রাথমিকভাবে ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন আবাসিক চিকিৎসকরা। কিন্তু বুধবার রাতে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনায় নতুন করে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন তারা।

বৃহস্পতিবার ফোরডার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গভীর রাতে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ঢুকে ভাঙচুর চালানোর ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ফের কর্মবিরতি শুরু করতে চলেছে ফোরডা।

ফোরডা বলেছে, ‘‘আমরা জানি, কর্মবিরতি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে আশাহত হয়েছিলেন চিকিৎসকদের অনেকেই। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পর আমরা প্রাথমিকভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু গতকাল রাতের বর্বরতার ঘটনায় আমরা সকলেই বিস্মিত, মর্মাহত। এই ঘটনা আমাদের সকলের কর্মজীবনের অন্ধকারতম অধ্যায়। এই অবস্থায় আমরা অবিলম্বে আবারও কর্মবিরতি শুরু করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। শিগগিরই রেসিডেন্ট ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন-সহ অন্যান্য আহ্বায়কদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব।’’

কলকাতার আরজি কর নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘিরে আন্দোলনের রেশ দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছে সারা ভারতে। চিকিৎসকদের ধর্মঘট ও বিক্ষোভের জেরে দেশটির স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল ছাড়াও কর্মবিরতি শুরু হয়েছে রাজধানী দিল্লি, মুম্বাই, লখনউ, কর্নাটকসহ দেশটির বিভিন্ন হাসপাতালেও। বুধবার দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে ‌রাত দখল কর্মসূচি পালন করেছে দেশটির হাজার হাজার নারী। তাদের এই আন্দোলনে অন্যান্য শ্রেণিপেশারও মানুষও অংশ নেয়।

ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেপি নাড্ডার কাছে চিঠি লিখে কয়েক দফা দাবি জানিয়েছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)। সোম থেকে বুধবার পর্যন্ত আবাসিক চিকিৎসকদের কর্মবিরতির জেরে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে জরুরি ছাড়া প্রায় সব পরিষেবাই বন্ধ ছিল।

চিকিৎসকের খুনের ঘটনার যথোপযুক্ত তদন্ত এবং বিচারের দাবিতে দেশজুড়ে আন্দোলন শুরু করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। পাশাপাশি হাসপাতালে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়টিও তুলে ধরছেন তারা।  

এসএস