বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও ছাত্রনেতা নাহিদ ইসলাম সাম্প্রতিক শিক্ষার্থী-জনতার আন্দোলনে প্রাণহানির জন্য শেখ হাসিনাকে দায়ী করে তাকে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানিয়েছেন। দাবি পূরণ না হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।

রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নাহিদ এ প্রসঙ্গে বলেন, “তিনি কেন দেশ থেকে পালালেন, তা জানতে আমরা আগ্রহী। তার নেতৃত্বাধীন সরকারের সময় যত হত্যা হয়েছে, সেসবের বিচার আমরা দেখতে চাই। আমাদের সাম্প্রতিক বিপ্লবের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দাবি এটি। যদি তিনি বাংলাদেশে ফিরে না আসেন, সেক্ষেত্রে আমরা কঠোর কর্মসূচি নেবো।”

নাহিদ বলেন, “আমরা তাকে গ্রেপ্তার দেখতে চাই। নিয়মিত আদালত কিংবা বিশেষ ট্রাইব্যুনালে তার বিচার চলছে— এমনটা আমরা দেখতে চাই। এ ইস্যুতে আমাদের আলোচনা চলছে।”

আবু বাকের মজুমদার নামে অপর এক ছাত্রনেতা পৃথকভাবে জানিয়েছেন যে তারা চান, শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসুন এবং বিচারের সম্মুখীন হোন।

গত জুন মাসের শেষ দিকে হাইকোর্টের সিদ্ধান্তে সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহালের পর জুলাইয়ের শুরু থেকে তা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। ১৪ জুলাই’র পর থেকে আন্দোলন তীব্র হতে থাকে এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার লোকজন। এক পর্যায়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন পরিণত হয় সরকারবিরোধী আন্দোলনে।

আন্দোলনের তীব্রতার মুখে টিকতে না পেরে ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। বর্তমানে নয়াদিল্লিতে একটি সেফ হোমে অবস্থান করছেন তিন।

তার দেশত্যাগের পর ইতোমধ্যে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তবর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। সেই সরকারের উপদেষ্টার তালিকায় রয়েছেন দুই ছাত্র নেতা নাহিদ ইসলাম এবং আসিফ মাহমুদ।

১৯৯০ সালের জনতার অভ্যুত্থানে সামরিক শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পতনের পর বাংলাদেশের সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ধারা যুক্ত হয়। সেই ধারা অনুযায়ী কোনো নির্বাচিত সরকার মেয়াদ শেষের পর পরবর্তী নির্বাচনের আগ পর্যন্ত ক্ষমতাসীন থাকবেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার। এই সরকারের মেয়াদ হবে তিন মাস। ২০০৯ সালে নির্বাচনে জিতে ক্ষমতা গ্রহণের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার।

বর্তমানে যে অন্তবর্তী সরকারের মেয়াদ কতদিন হবে, রয়টার্সের সে সম্পর্কিত প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেননি নাহিদ। তবে তিনি বলেছেন, “বাংলাদেশেল নির্বাচন ব্যবস্থা এবং সংবিধানের সংস্কার প্রয়োজন। তাই পরবর্তী নির্বাচন কবে হবে— তা এখনই নিশ্চিত করে বলার উপায় নেই।”

সূত্র : রয়টার্স

এসএমডব্লিউ