গণবিক্ষোভের মুখে গত সোমবার ভারতে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, শেখ হাসিনা ‘স্বল্প সময়’ অবস্থানের কথা বলে তাদের এখানে আসেন। কিন্তু দুইদিন পার হওয়ার পরও হাসিনা এখনো ভারতেই রয়ে গেছেন।

দেশটির প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু মঙ্গলবার জানিয়েছে, শেখ হাসিনা সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ফিনল্যান্ডে আশ্রয়ের খোঁজ করছেন।

হিন্দু আরও জানিয়েছে, শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্যের কাছে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে আনুষ্ঠানিক আবেদন করেছেন। তবে সেখানে তার আশ্রয় পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। যদিও হাসিনার বোন শেখ রেহানা যুক্তরাজ্যের নাগরিক এবং তার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক সেখানকার ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য এবং জুনিয়র মন্ত্রী।

উল্টো যুক্তরাজ্যের বর্তমান সরকার হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক তদন্তের জন্য চাপ দিতে পারে বলেও জানিয়েছেন দেশটির এক সরকারি কর্মকর্তা।

ইউরোপের মধ্যে হাসিনার পরবর্তী গন্তব্য হতে পারে ফিনল্যান্ডের রাজধানী। সেখানে শেখ রেহানার ছেলে রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি থাকেন।

ফিনল্যান্ডে শেখ হাসিনা রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য আবেদন করতে পারেন কিনা এমন প্রশ্ন করা হয় ফিনিশ প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সান্ডার স্টাবের দপ্তরে। তবে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু আরও জানিয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পরই যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার জন্য আবেদন করেন। কিন্তু এটি প্রত্যাখ্যান করা হয়। তবে তার পাসপোর্টে আগে থেকেই মার্কিন ভিসা লাগানো ছিল। কিন্তু তিনি দেশ থেকে পালানোর পরই এটি বাতিল করে দেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জানানো হয় যেহেতু হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন তাই তার এ ভিসাটি আর বৈধ থাকছে না।

যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় বসবাস করেন শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। যদি হাসিনা দেশটিতে যেতে পারতেন তাহলে তিনি হয়তবা সজীবের বাসায় উঠতেন।

দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, শেখ হাসিনা যদি বেশিদিন ভারতে থাকেন তাহলে এটি ভারতের জন্য বিব্রতকর হবে। কারণ বাংলাদেশের নতুন সরকার শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করতে ফেরত চাইতে পারে।

ঠিক এই কারণেই শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে এবং আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানিকে ভারত আশ্রয় দেয়নি।

সূত্র: দ্য হিন্দু

এমটিআই