উত্তর ইসরায়েল থেকে তোলা এই ছবিতে দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলি বোমাবর্ষণের সময় ধোঁয়া উড়তে দেখা যাচ্ছে। রোববারের ছবি

ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চালিয়েছে লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছে ইসরায়েল। হিজবুল্লাহর দাবি, এই হামলায় ইসরায়েলি সেনারা নিহত ও আহত হয়েছে।

সোমবার (৫ আগস্ট) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

হিজবুল্লাহ বলেছে, তারা ড্রোন দিয়ে আয়েলেট হাশাহারে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর ৯১ তম ডিভিশনের ব্যারাকে আক্রমণ করেছে। সরাসরি চালানো এই হামলায় ইসরায়েলি সেনা নিহত ও আহত হয়েছে বলেও দাবি করেছে ইরানপন্থি লেবানিজ এই সশস্ত্র গ্রুপটি।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এই হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তবে তারা এটিকে রকেট হামলা বলে বর্ণনা করেছে এবং বলেছে, হামলায় দুই সেনা ‘মাঝারিভাবে আহত’ হয়েছে।

সামরিক বাহিনী বলেছে, ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা লেবানন থেকে উৎক্ষেপণ করা রকেটগুলোকে আটকে দিলেও অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা ওই এলাকায় ছড়িয়ে পড়া আগুন নেভানোর জন্য কাজ করছে।

এদিকে তেহরানে ইসমাইল হানিয়া এবং বৈরুতে হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডার ফুয়াদ শুকরের হত্যাকাণ্ডের পর উত্তেজনা বৃদ্ধির আশঙ্কার মধ্যে ইতালি এবং তুরস্ক তাদের নাগরিকদের লেবানন ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছে।

ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি লেবাননে অবস্থানরত ইতালীয়দের ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাণিজ্যিক ফ্লাইটে ইতালিতে ফিরে আসার’ এবং ‘বিদ্যমান পরিস্থিতির কারণে’ দেশের দক্ষিণে ভ্রমণ না করার আহ্বান জানিয়েছেন।

অন্যদিকে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় লেবাননে তার নাগরিকদের ‘সতর্কতা অবলম্বন করতে এবং একেবারে প্রয়োজন না হলে নাবাতিহ, দক্ষিণ লেবানন, বেকা এবং বালবেক-হারমেল অঞ্চলে ভ্রমণ না করতে’ পরামর্শ দিয়েছে।

বিবৃতিতে নাগরিকদের ‘অপরিহার্য কোনও কারণ না থাকলে’ তাদের লেবানন ছেড়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

মূলত গত ৭ অক্টোবর হামাস-ইসরায়েলের সংঘাত শুরুর পর থেকে হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী নিয়মিতভাবেই সীমান্তে গুলিবিনিময় করছে। হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে ২০০৬ সালের যুদ্ধের পর এটিই ইসরায়েল-লেবানিজ সীমান্তে সবচেয়ে খারাপ সহিংসতার ঘটনা।

বার্তাসংস্থা এএফপির সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েলের এই লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত লেবাননে কমপক্ষে ৫৪২ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের বেশিরভাগই হিজবুল্লাহ যোদ্ধা। এছাড়া নিহতদের মধ্যে ১১৪ জন বেসামরিক নাগরিকও রয়েছেন।

অন্যদিকে হিজবুল্লাহর হামলায় ২২ ইসরায়েলি সৈন্য ও ২৫ বেসামরিক নাগরিকসহ মোট ৪৭ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছে। এছাড়া নিয়মিত গোলাবর্ষণের কারণে সীমান্তের উভয়পাশে কয়েক হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

টিএম