সন্ত্রাসবাদে উসকানির দায়ে যুক্তরাজ্যের হাই-প্রোফাইল ইসলাম ধর্ম প্রচারক ও বক্তা আনজেম চৌধুরীকে (৫৭) যাবজ্জীবন কারাবাসের আদেশ দিয়েছেন লন্ডনের একটি আদালত। মঙ্গলবার এই আদেশ দিয়েছেন আদালত।

যুক্তরাজ্যের আইন ও দণ্ডবিধি অনুযায়ী, আজীবন কারাবাস করতে হবে আনজেম চৌধুরীকে। এমনকি প্যারোলের জন্য আবেদন করার যোগ্যতা তিনি অর্জন করবেন কমপক্ষে ২৮ বছর কারাগারে কাটানোর পর।

পাকিস্তনি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক আনজেম চৌধুরী যুক্তরাজ্যে আল-মুহাজিরুন নামে একটি সংস্থা পরিচালনা করতেন। উগ্র মৌলবাদী মতাদর্শ প্রচারের অভিযোগে ২০২৩ সালে সংস্থাটি নিষিদ্ধ করে ব্রিটেনের সরকার। ওই বছরই গ্রেপ্তার হন তিনি।

তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বিচারকাজ চলেছে লন্ডনের উলউইচ ক্রাউন আদালতে। মঙ্গলবার যখন রায় ঘোষণা করা হয়, সে সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন আনজেম। রায় ঘোষণার সময় তাকে উদ্দেশ্য করে বিচারক মার্ক ওয়াল বলেন, “আপনি যে ধরনের সংস্থা পরিচালনার জন্য আজ আপনি এখানে, সে ধরনের সংস্থাগুলো বরাবর ধর্মের দোহাই দিয়ে সহিংসতাকে বৈধতা দেয়। এসব সংস্থার সংস্পর্ষে যারা আসে, তাদের বেশিরভাগের মনেই এই বিশ্বাস দৃঢ়ভাবে জন্মায় যে ভিন্ন মতাবলম্বী এবং অন্য ধর্মের লোকজনের ওপর হামলা করা বৈধ এবং জরুরি। যারা শান্তিপূর্ণভাবে জীবনযাপন করতে চায়, তাদের জন্য এ ধরনের লোকজন রীতিমতো হুমকি।”

এ সময় আনজেম চৌধুরীকে কিছু বলতে দেখা যায়নি।

প্রসঙ্গত, যুক্তরাজ্যের এক সময়ের শীর্ষ ইসলামি বক্তা আনজেম চৌধুরী প্রথম সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে টুইন টাওয়ারে ভয়াবহ হামলার সমর্থন জানানোর মাধ্যমে। তার কয়েক বছর পর তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের রাজ পরিবারের প্রধান প্রাসাদ ও দপ্তর বাকিংহাম প্যালেসকে মসজিদে রূপান্তর করতে চান তিনি।

আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটকে সমর্থন এবং গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে প্রচারের অভিযোগে ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো গ্রেপ্তার হন আনজেম। প্রায় আড়াই বছর কারাবাসের পর ২০১৮ সালে মুক্তি পান তিনি।

উলউইচ ক্রাউন আদালতের প্রসিকিউটর টম লিটল রয়টার্সকে জানান আনজেম চৌধুরী এবং ওমর বাকরি মোহাম্মদ নামের আরেক প্রচারক যৌথভাবে আল-মুহাজিরুন চালাতেন। ২০১৪ সালে ওমর বাকরি গ্রেপ্তার হওয়ার পর সংস্থাটি একাই পরিচালনা করে আসছিলেন আনজেম। এ সময় আল মুজাজিরুনে তার পদের নাম ছিল ‘ভারপ্রাপ্ত আমির’।

সূত্র : রয়টার্স

এসএমডব্লিউ