মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তা সরকার দেশজুড়ে জারি করা জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ছয় মাসের জন্য বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিদ্রোহীদের সাথে সংঘাত ও অর্থনৈতিক সঙ্কট ঘিরে ক্ষমতা ধরে রাখতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে জান্তা। এর মাঝে বুধবার দেশটিতে আগামী ছয় মাসের জন্য জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়িয়েছে জান্তা।

সামরিক জান্তা-পরিচালিত মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম মায়াবতী বলেছে, সেনা-নিয়ন্ত্রিত ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যান্ড সিকিউরিটি কাউন্সিল জান্তাকে ভোটার তালিকায় জনসংখ্যার তথ্য একত্রিত করার লক্ষ্যে জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়িয়েছে। দেশটিতে আগামী বছর জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে জান্তা।

২০২১ সালে মিয়ানমারের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখলে নেওয়ার পর এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করে সামরিক বাহিনী। সেই সময় দেশটির গণতন্ত্রকামী নেত্রী অং সান সুচিকে ক্ষমতাচ্যুত করে গৃহবন্দী করে জান্তা সরকার। তখন থেকেই দেশটিতে জান্তা বিরোধী বিক্ষোভ-প্রতিবাদ অব্যাহত আছে। বিক্ষোভ দমনে জান্তা সরকার ব্যাপক বলপ্রয়োগ করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

তখন থেকে প্রতি ছয় মাস পর পর জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়িয়েছে জান্তা। দেশটিতে শুরু হওয়া প্রতিবাদ আন্দোলন বর্তমানে সশস্ত্র বিদ্রোহে রূপান্তরিত হয়েছে। এই বিদ্রোহী এখন ছড়িয়ে পড়েছে দেশের সব ফ্রন্টেই; যা সেনা জেনারেলদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সর্বশেষ মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়ে মিয়ানমারের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম বলেছে, চলমান সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে শান্তি ও স্থিতিশীলতা পুনরায় ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন। গত সপ্তাহে দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতার কারণে অলঙ্কারিক রাষ্ট্রপ্রধানের পদে থাকা ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট মিন্ট শোয়ে চিকিৎসার জন্য ছুটি নেওয়ায় মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের সব দায়িত্ব জান্তা প্রধান মিন অং হ্লেইংয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার পর থেকে মিন অং হ্লেইং বারবার বহুদলীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। গত জুনে তিনি বলেছিলেন, ২০২৫ সালে দেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। চলমান সহিংসতার কারণে আগের নির্বাচনের সময়সীমা স্থগিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। মিন অং হ্লেইং জোর দিয়ে বলেছেন, দীর্ঘদিন ক্ষমতা ধরে রাখার পরিকল্পনা নেই জান্তার।

সূত্র: রয়টার্স।

এসএস