গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের শীর্ষ নেতা ও রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়ার হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে গোষ্ঠীটি। বুধবার তার নিহত হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই এ ঘোষণা দেন হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা মুসা আবু মারজুক।

ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তেহরান গিয়েছিলেন হানিয়া। সেখানে বুধবার এক হামলায় নিহত হন তিনি এবং তার এক দেহরক্ষী। যে বাড়িতে অবস্থান করছিলেন হানিয়া, সেই বাড়িটি উড়িয়ে দিয়েছে হামলাকারীরা।

এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর হামাস পরিচালিত টেলিভিশন চ্যানেল আল-আকসা টিভিতে হানিয়ার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে মুসা আবু মারজুক বলেন, “আমাদের ভাই, নেতা, মুজাহিদ এবং (গাজার) সরকারপ্রধান ইসমাইল হানিয়া ইহুদি জায়নবাদীদের হামলায় নিহত হয়েছেন। আমরা এই কাপুরুষোচিত হামলার জবাব দেবো। এই হত্যার জন্য যারা দায়ী, তাদেরকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।”

হামাসের আরেক জ্যেষ্ঠ নেতা সামি আবু জুহরি সৌদির টেলিভিশন চ্যানেল আর আরাবিয়াকে বলেন, “ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার মাধ্যমে যে উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায় শত্রুরা, তা কখনও পূরণ হবে না।”

ইসমাইল হানিয়া হামাসের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। গত শতকের আশির দশকের শেষ দিকে প্রতিষ্ঠিত হয় এই গোষ্ঠীটি।

২০০৬ সালে ফিলিস্তিনের জাতীয় নির্বাচনে গাজায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে হামাস। তার পুরষ্কার হিসেবে হানিয়াকে ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। কিন্তু তার কিছু দিন পরেই গাজায় হামাস ও ফাতাহের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘাত শুরু হলে হানিয়াকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেন আব্বাস। তবে হানিয়া এই সিদ্ধান্তকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে সে সময় বলেছিলেন, তার সরকার ফিলিস্তিনের জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং জনগণের প্রতি দায়িত্ব পালন থেকে তিনি বা তার সরকার সরবেন না। তারপর থেকেই মূলত গাজার সম্পূর্ন নিয়ন্ত্রণ চলে যায় হামাসের হাতে।

২০১৭ সালে হামাসের রাজনৈতিক বিভাগের প্রধান হন হানিয়া। তার পরের বছরই তাকে ‘সন্ত্রাসী’ তকমা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর। এই ঘোষণার পর গাজা ছেড়ে কাতারে চলে যান হানিয়া। গত কয়েক বছর সেখানেই বসবাস করছিলেন তিনি।

সূত্র : আল আরাবিয়া, রয়টার্স

এসএমডব্লিউ