যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে (৭৮) নির্বাচনী বিতর্কের চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন  দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমালা হ্যারিস (৫৯)। মঙ্গলবার জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টা শহরে এক প্রচারণাসভায় এই চ্যালেঞ্জ জানান কমালা।

প্রচারণাসভায় কমালা হ্যারিস বলেন, “নির্বাচনকেন্দ্রিক রাজনীতির গতি-প্রকৃতির পরিবর্তন ঘটছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড থেকে সম্ভবত আপনারা তা আঁচ করতে পারছেন। আগামী সেপ্টেম্বরে যে নির্বাচনী বিতর্কে অংশ নেওয়ার কথা ছিল তার, সেখান থেকে ইতোমধ্যে নিজেকে সরিয়ে নিছেন তিনি।”

চলতি বছর নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে যুক্তরাষ্ট্রে। নির্বাচনের আগে দেশটির প্রধান দুই দল ডেমোক্রেটিক পার্টি ও রিপাবলিকান পার্টির দুই প্রার্থীর তিন দফা মুখোমুখি বিতর্ক হওয়ার সূচি রয়েছে। এর মধ্যে প্রথম বিতর্কটি হয়েছে গত ২৮ জুন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিপরীতে বিতর্কে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এবং ডেমোক্রেটিক পার্টির তৎকালীন প্রার্থী জো বাইডেন।

শিডিউল অনুযায়ী, আগামী সেপ্টেম্বর মাসে হবে দ্বিতীয় বিতর্ক। তবে সেই বিতর্কে ট্রাম্পের বিপরীতে থাকছেন না বাইডেন। গত ২০ জুলাই নিজের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন তিনি। তার সরে যাওয়ার পর কমালা হ্যারিসকে ডেমোক্রেটিক পার্টি নিজেদের প্রার্থী করায় পরবর্তী বিতর্কে ট্রাম্পের বিপরীতে থাকবেন কমালা।

জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে ডেমোক্রেটিক পার্টির সবচেয়ে শক্তিশালী ঘাঁটি আটলান্টা শহর। মঙ্গলবার সেখানে যে নির্বাচনী প্রচারণা সভা করেছেন কমালা হ্যারিস, সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রায় ১০ হাজার মানুষ।

সভায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্দেশে বিতর্কের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে কমালা হ্যারিস সরাসরি বলেন, “ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার রানিং মেট সম্প্রতি আমার সম্পর্কে বিভিন্ন মন্তব্য করছেন এবং সেসব আমার কানেও এসেছে। বেশ ডোনাল্ড, আমি আশা করছি আপনি আমার সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যাপারটি পুনর্বিবেচনা করবেন এবং যা বলার, সরাসরি আমার সামনে বলবেন; আড়ালে নয়।”

আসন্ন নির্বাচনে ডোমোক্রেটিক পার্টিকে জয়ী করতে আটলান্টার ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে কমালা বলেন, “আগামী নির্বচন মূলত দু’টি পৃথক দর্শন, দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যকার লড়াই। একটি দল সবসময় দেশের ভবিষ্যৎকে গুরুত্ব দেয়, অন্য দলটি শুধু অতীত নিয়ে পড়ে থাকে।”

“গত কয়েক বছর ধরে আমরা দেখছি— যে কঠোর সংগ্রামের মাধ্যমে আমরা আমাদের স্বাধীনতা ও অধিকার অর্জন করেছি, তার ওপর সরাসরি আঘাত আসছে। দেশজুড়ে বন্দুক সহিংসতা বাড়ছে। ধর্মান্ধতা, বর্ণবাদ, ঘৃণা বাড়ছে।”

“কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রকৃত চেহারা এটি নয়। যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি দেশ, যেখানে মানবাধিকার ও স্বাধীনতাকে সর্বোচ্চ মর্যাদা দেওয়া হয়। আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে তার সত্যিকারের চেহারায় দেখতে চাই। আপনারা, আটলান্টার বাসিন্দারা অতীতে সবসময় ডেমোক্রেটিক পার্টির সঙ্গে থেকেছেন। এবারের নির্বাচন এবং অনাগত ভবিষ্যতেও এই সমর্থন অব্যাহত থাকবে— এটাই আপনাদের প্রতি আমার একান্ত প্রত্যাশা।”

সূত্র : দ্য নিউইয়র্ক পোস্ট

এসএমডব্লিউ