মানুষের মুখের মধ্যে থাকা একপ্রকার অনুজীব বা ব্যাকটেরিয়া কিছু কিছু ক্যানসারের কোষ গলিয়ে ফেলতে সক্ষম। যুক্তরাজ্যের সরকারি স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের (এনএইচএস) অধীন দুই সংস্থা গাই’জ অ্যান্ড সেইন্ট টমাস এবং কিংস কলেজ অব লন্ডনের বিজ্ঞানীদের গবেষণায় উঠে এসেছে এ তথ্য।

আলোচিত এই ব্যাকটেরিয়ার নাম ‘ফুসোব্যাক্টেরিয়াম’। মানুষের মুখের লালায় যে বিভিন্ন ব্যাক্টেরিয়া থাকে, ফুসোব্যাক্টেরিয়ামও সেসবের মসধ্যে একটি। গাই’জ অ্যান্ড সেইন্ট টমাস এবং কিংস কলেজ অব লন্ডনের গবেষকরা জানিয়েছেন, এই ব্যাকটেরিয়া মানুষের ঘাড় ও মাথার ক্যানসার কোষগুলোকে ৭০ শতাংশ থেকে ৯৯ শতাংশ পর্যন্ত গলিয়ে ফেলতে পারে। ১৫৫ জন রোগীর ওপর ট্রায়াল পরিচালনা করে এ ই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন তারা।

ফুসোব্যাক্টেরিয়ামের এমন সুবিধা অনেকটা চমকে দেওয়ার মতো। কারণ এর আগের এক গবেষণায় এর যোগসূত্র দেখা গিয়েছিল অন্ত্রের ক্যান্সার হওয়ার সঙ্গে এই ব্যাকটেরিয়ার যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছিল। অর্থাৎ ফুসোব্যাক্টেরিয়ারম এমন এক প্রকার ব্যাকটেরিয়া, যেটি মাথা ও ঘাড়ের ক্যানসারের জন্য উপকারী হলেও অন্ত্রের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

গবেষকরা এখন এই ব্যাক্টেরিয়ার কার্যক্ষমতার পেছনে থকা জৈবিক প্রক্রিয়া নিয়ে গবেষণা করছেন। তারা আশা করছেন—এ ব্যাক্টেরিয়ার সহায়তায় মাথা ও ঘাড় সংশ্লিষ্ট ক্যান্সার রোগীদের জন্য নতুন চিকিৎসা ব্যবস্থা তৈরি করা যাবে, যার মধ্যে রয়েছে মুখ, নাক, সাইনাস, গলা ও কণ্ঠলানীর ক্যান্সার।

“এর ফলাফলে আমরা দেখেছি, মাথা ও ঘাড় সংশ্লিষ্ট ক্যান্সারের মধ্যে এইসব ব্যাক্টেরিয়া পাওয়া গেলে এর ফলাফল আরও ভালো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে,” বলেন গাই’জ অ্যান্ড সেইন্ট টমাসের পরামর্শক ও কিংস কলেজের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক ড. মিগেল রেইস ফেরেইরা।

“তবে, ক্যান্সার সৃষ্টিতে ব্যাক্টেরিয়ার বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় নিয়ে এ অনুসন্ধানে ভারসাম্য আনা উচিৎ। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, পেটের ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য এই ব্যাক্টেরিয়া ব্যবহার করা হলে রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে।”

স্বাস্থ্যবিষয়ক আন্তর্জাতিক সাময়িকী ‘ক্যান্সার কমিউনিকেশনস’-এ এই গবেষণা প্রবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে।

সূত্র : স্কাই নিউজ

এসএমডব্লিউ