আর কয়েক ঘণ্টা পরে ফ্রান্সে শুরু হবে অলিম্পিক আসরের উদ্বোধন অনুষ্ঠান। তার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে ভয়াবহ হামলা ঘটেছে দেশটির রেল নেটওয়ার্কে।

সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে উচ্চগতির ট্রেন ও রেল লাইনগুলোর। ফ্রান্সের রাষ্ট্রায়ত্ব রেল নেটওয়ার্ক কর্তৃপক্ষ সংস্থা এসএনসিএফের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানী প্যারিসের সঙ্গে সংযুক্ত বিভিন্ন রুটের রেল লাইন ও রেল গাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালায় দুষ্কৃতিকারীরা। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল উচ্চগতির ট্রেনগুলো।

“বিভিন্ন স্থানে রেল লাইন উপড়ে ফেলা হয়েছে, অনেক জায়গায় ট্রেনের বগি ও স্টেশনে আগুন দেওয়া হয়েছে। এক কথায়, ফ্রান্সের পুরো রেল নেটওয়ার্ক লণ্ডভণ্ড করে ফেলেছে হামলাকারীরা,” রয়টার্সকে বলেন এসএনসিফের এক কর্মকর্তা।

শুক্রবার স্থানীয় সময় সকালে এএসএনসিফের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, “সিএনএসএফ সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছে। গত (বৃহস্পতিবার) রাতে আটলান্টিক, উত্তরাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের লাইনের অনেকগুলো রেলগাড়ি ও স্টেশনে আগুন দিয়েছে দুবৃত্তরা, অনেক জায়গায় রেল লাইন উপড়ে ফেলা হয়েছে।”

“আমাদের মেরামতের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। এতে কিছু সময় ব্যয় হবে। যাত্রী সাধারণকে ধৈর্য্য ধারণের জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।”

ফ্রান্সের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হামলার ধরন ও আলামত দেখে তারা ধারণা করছেন— এটি বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়, বরং পূর্ব পরিকল্পিত সহিংসতা। অলিম্পিকের আসরকে বাধাগ্রস্ত করতে এ ধরনের হামলা চালানো হয়েছে বলে মনে করছেন তারা।

প্রসঙ্গত, বৈশ্বিক অলিম্পিক আসর উপলক্ষে রাজধানী প্যারিসে নজিরবিহীন নিরাপত্তা জারি করেছে ফ্রান্স। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, ৪৫ হাজারেরও বেশি পুলিশ, ১০ হাজারেরও বেশি সেনা সদস্য এবং বিভিন্ন বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার অন্তত ২ হাজার কর্মী অলিম্পিক আসরের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন।

বৃহস্পতিবার রাতে রেল নেটওয়ার্কে যে নাশকতা ঘটল, তার দায় এখন পর্যন্ত কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী স্বীকার করেনি। পরিবহনমন্ত্রী প্যাট্রিস ভারগ্রিয়েট এই ঘটনাকে অপরাধী তৎপরতা বলে উল্লেখ করেছেন। প্যারিসের পুলিশ প্রধান জানিয়েছেন, রাজধানীসহ দেশজুড়ে রেল স্টেশনগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

ফ্রান্সের ক্রিড়ামন্ত্রী অ্যামেলি ওউদেয়া-ক্যাস্তেরা দেশটির টেলিভিশন চ্যানেল বিএফএম টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রেল নেটওয়ার্কে হামলার এই ঘটনাকে ‘ধ্বংসাত্মক’ উল্লেখ করে বলেছেন, “আমরা হতবাক হয়ে গেছি।”

সূত্র: রয়টার্স

এসএমডব্লিউ