বাংলাদেশের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমর্থনে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ কর্মসূচি ও দাঙ্গা সৃষ্টির অভিযোগে ৫৭ জন বাংলাদেশিকে কারাদণ্ডের যে আদেশ দিয়েছেন দেশটির আদালত, তার নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।

বুধবার এক বিবৃতিতে আদালতের এই রায়কে ‘বিচারের নামে প্রহসন’ বলে উল্লেখ করে এইচআরডব্লিউ’র আমিরাত বিষয়ক গবেষক জোয়ে শিয়া বলেন, “এই রায় অপমানজনক এবং বিচার প্রক্রিয়া ছিল অস্বাভাবিক রকমের দ্রুত। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের পর মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত করে রায় দেওয়া হয়েছে এবং অভিযুক্তদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়নি। এইচআরডব্লিউ এই বিচার প্রক্রিয়ার ন্যায্যতা ও সঠিকতা নিয়ে উদ্বিগ্ন।”

বাংলাদেশের কোটা আন্দোলনের সমর্থনে রোববার রাজধানী আবুধাবিসহ আমিরাতের ৭ প্রদেশের (এমিরেত) বিভিন্ন শহরে সড়কে রোববার বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেন দেশটিতে বসবাসরত বাংলাদেশিরা। সেই কর্মসূচির সংগঠিত করার অভিযোগে বিভিন্ন শহর থেকে মোট ৫৭ জন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তারের পর তাদের হাজির করা হয় আবুধাবির একটি আদালতে। সোমবার আদালত রায় প্রদান করেন। সেই রায়ে গ্রেপ্তার ৫৭ জনের মধ্যে ৩ জনকে যাবজ্জীবন, একজনকে ১১ বছর ও বাকি ৫৩ জনকে ১০ বছর করে কারাবাসের সাজা দেন আদালত।

প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিক্ষোভ কর্মসূচি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি আমিরাতের সরকার, তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতোমধ্যে সেসব কর্মসূচির বেশ কিছু ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, দুবাই শহরের দুবাই মল এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন শত শত বাংলাদেশি। 

মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চলের তেলসমৃদ্ধ এই দেশটির আইনে সড়কে বিক্ষোভ মিছিল শুধু নিষিদ্ধই নয়, বরং এটি একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এছাড়া সড়কে প্রকাশ্যে বা লিখিতভাবে আমিরাত বা যে কোনো দেশেল সরকারের উদ্দেশে অপমানজনক বক্তব্যও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে পরিগণিত হয় দেশটির আইনে।

মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞলের দেশ আমিরাতের প্রদেশ বা এমিরেতের সংখ্যা ৭টি। দেশটির মোট জনসংখ্যার অধিকাংশই অভিবাসী। সরকারি তথ্য অনুসারে, আমিরাতের স্থায়ী অভিবাসীদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছেন ভারতীয়রা। তারপর দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছেন যথাক্রমে পাকিস্তানি ও বাংলাদেশিরা।

সূত্র : এএফপি

এসএমডব্লিউ