অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং (ফাইল ছবি)

ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনকারী ইসরায়েলিদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে অস্ট্রেলিয়া। একইসঙ্গে ইসরায়েলের এক যুব গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ওপর অব্যাহত সহিংসতার দায়ে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী ও যুব গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটি। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংসতায় জড়িত থাকায় বৃহস্পতিবার সাতজন ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী এবং একটি যুব গোষ্ঠীর ওপর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা এবং ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে অস্ট্রেলিয়া।

নাম প্রকাশ না করা ইসরায়েলি ওই গোষ্ঠীটি ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উস্কে দেওয়ার জন্য দায়ী। এছাড়া ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের মারধর, যৌন নিপীড়ন এবং নির্যাতন এবং কিছু ক্ষেত্রে প্রাণহানির ঘটনায় জড়িত বলে অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং বলেছেন।

পেনি ওং এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতা এবং অপরাধীদেরকে জবাবদিহির আওতায় আনার জন্য এবং তাদের চলমান বসতি স্থাপনের কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য আমরা ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। এসব কর্মকাণ্ড শুধুমাত্র উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তোলে এবং স্থিতিশীলতা ও দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের সম্ভাবনাকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করে।’

পশ্চিম তীরে সহিংসতার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের মিত্র ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং জাপান কিছু ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর অস্ট্রেলিয়ান সরকারের পক্ষ থেকে এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো।

এদিকে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থিত ইসরায়েলের দূতাবাস বলেছে, দেশটি ফিলিস্তিনি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংস কর্মকাণ্ডের নিন্দা করেছে। দূতাবাসের মুখপাত্র একটি ইমেইলে বলেছেন, ‘ইসরায়েল এমন রাষ্ট্র যা আইন মেনে চলে এবং জড়িত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে কাজ করবে ইসরায়েল।’

প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে অতি-ডানপন্থি সরকার বসতি স্থাপনকারীদের সমর্থনের ইঙ্গিত দেওয়ার পর থেকে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতা বেড়েছে। আর গত বছরের গত ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের আক্রমণ দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর যে আগ্রাসন চলছে তার সঙ্গে পশ্চিম তীরে তাল মিলিয়ে চলা অভিযানে এখন পর্যন্ত শত শত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

এছাড়া অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতিগুলো ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে ইসরায়েলের দখলে চলে যাওয়া ভূখণ্ডে নির্মাণ করা হচ্ছে। এসব বসতি বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের কাছে অবৈধ বলে বিবেচিত।

মূলত দখলকৃত ভূখণ্ডে বসতি স্থাপনের সংখ্যা গত দশকে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফিলিস্তিনিরা বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতাকে তাদের ভূমি থেকে জোরপূর্বক উচ্ছেদের ইসরায়েলি প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বর্ণনা করে থাকে।

অধিকৃত ফিলিস্তিনি এই ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকে অবৈধ এবং শান্তির পথে প্রতিবন্ধক বলে মনে করে থাকে অস্ট্রেলিয়া।

টিএম