ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এবং হামাসের রাজনৈতিক শাকার প্রধান ইসমাঈল হানিয়া

প্রায় তিন মাস স্থগিত থাকার পর ফের শুরু হচ্ছে ফিলিস্তিনের দুই প্রভাবশালী রাজনৈতিক গোষ্ঠী ফাতাহ ও হামাসের মধ্যে ঐক্য সংলাপ। দুই গোষ্ঠীর একাধিক জ্যেষ্ঠ নেতা সোমবার রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নেতারা জানিয়েছেন, চলতি জুলাই মাসের শেষ দিক থেকে শুরু হবে সংলাপ। আগের মতো দুপক্ষের বৈটক বসছে বেজিংয়ে।

গাজা, পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেম— তিন ভূখণ্ডের সমন্বয়ে গঠিত ফিলিস্তিন। ২০০৭ সাল থেকে গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণ করছে সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস। অন্যদিকে পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ক্ষমতায় রয়েছে রাজনৈতিক দল ফাতাহের নেতৃত্বাধীন জোট ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (প্যালেস্টাইনিয়ান অথরিটি-পিএ)। ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ফাতাহের শীর্ষ নেতা।

এক সময় গাজা উপত্যকায়ও ক্ষমতায় ছিল ফাতাহ। কিন্তু ২০০৭ সালে নির্বাচনে জয়ী হয়ে গাজার ক্ষমতা গ্রহণের পাশাপাশি ফাতাহকে উপত্যকা থেকে উচ্ছেদ করে হামাস।

দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিরোধিতার প্রধান ইস্যু স্বাধীনতা অর্জনের পন্থা নিয়ে। ফাতাহ সংলাপ এবং রাজনৈতিক তৎপরতার ভিত্তিতে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে। অন্যদিকে হামাস বিশ্বাস করে, সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে ইসরায়েল রাষ্ট্রকে নিশ্চিহ্ন করার মাধ্যমেই কেবল ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অর্জন সম্ভব।

তবে ফিলিস্তিনে জনপ্রিয়তা থাকলেও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে হামাসের তেমন কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা বিশ্বের অধিকাংশ দেশ হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে বেশ কয়েক বছর আগেই। মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার দেশগুলো এখনও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে ঘোষণা না করলেও অধিকাংশ দেশ সব সময় এই গোষ্ঠীটির সংশ্রব থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখে।

অন্যদিকে ফাতাহের নেতৃত্বাধীন জোট ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (প্যালেস্টাইনিয়ান অথরিটি-পিএ) আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ফিলিস্তিনের বৈধ শাসক হিসেবে স্বীকৃত।

প্রায় ১৭ বছর বৈরিতা চলার পর গত এপ্রিলে বৈঠক শুরু হয় হামাস ও ফাতাহের প্রতিনিধিনিদের মধ্যে। কিন্তু বেশিদূর এগোনোর আগেই ছেদ পড়ে সেই সংলাপে।

ধারণা করা হয়েছিল, এর মধ্যে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করবে। কিন্তু নিকট ভবিষ্যতে এমন কোনো লক্ষণ দেখা না যাওয়ায় ফের নিজেদের মধ্যকার বিভেদগুলো মিটিয়ে নিতে প্রস্তুত হচ্ছে ফাতাহ এবং হামাস।

সূত্র : রয়টার্স

এসএমডব্লিউ