চীন-বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচিত দক্ষ কূটনীতিক বিক্রম মিশ্রিকে নতুন পররাষ্ট্রসচিব হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। চীনে নিযুক্ত সাবেক এই কূটনীতিককে সোমবার ভারতের নতুন পররাষ্ট্রসচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

দেশটির সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সেপ্রেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার অবসরে যাওয়া পররাষ্ট্রসচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার স্থলাভিষিক্ত হিসেবে চীন বিশেষজ্ঞ বিক্রম মিশ্রি নিয়োগ পেয়েছেন। আগামী ২০২৬ সালের জুলাইয়ের শেষ পর্যন্ত দুই বছরের মেয়াদের জন্য তাকে নতুন এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

ভারতের ১৯৮৯ ব্যাচের ভারতীয় পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তা বিক্রম মিশ্রি। বিনয় মোহন কোয়াত্রার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ভারতের বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের কাছে বিক্রম মিশ্রির নাম সুপারিশ করেছিল দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপর নিয়োগ কমিটি সেই সুপারিশ মেনে কোয়াত্রার উত্তরসূরি হিসাবে বিক্রমকে নিয়োগ দেয়।

রোববার ভারতের পররাষ্ট্রনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তায় উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য কোয়াত্রাকে ধন্যবাদ জানিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর। একই সঙ্গে সোমবার পররাষ্ট্রসচিবের কার্যালয়ে বিক্রম মিশ্রিকে অভিনন্দনও জানান তিনি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে জয়শঙ্কর বলেন, ‌‌‘‘আজ থেকে ভারতের পররাষ্ট্রসচিবের দায়িত্ব কাঁধে নিলেন বিক্রম মিশ্রি। আগামী দিনে নতুন দায়িত্বের জন্য তাকে অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়।

এর আগে, ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত চীনে ভারতের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন বিক্রম মিশ্রি। ফলে বেইজিংয়ের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, কূটনীতিসহ বিভিন্ন বিষয় তার নখদর্পণে। ২০২০ সালের ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চীনের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মাঝে প্রাণঘাতী সংঘাত হয়। রক্তক্ষয়ী সেই সংঘর্ষে ভারতীয় ২০ সৈন্যের প্রাণহানি ঘিরে দুই দেশের সম্পর্কে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। সেসময় উত্তেজনা হ্রাসে দিল্লি ও বেইজিংকে আলোচনার টেবিলে বসানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন বিক্রম মিশ্রি।

২০২২ সালের ১ জানুয়ারি চীন বিশেষজ্ঞ বিক্রমকে ভারতের উপ-জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সহকারী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। গত ১৪ জুলাই পর্যন্ত এই পদে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। কর্মজীবনে আরও নানা গুরুত্বপূর্ণ পদে দেখা গেছে বিক্রমকে। ১৯৯৭ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দর কুমার গুজরাল, ২০১২ সালে মনমোহন সিং ও ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদির ব্যক্তিগত সচিব হিসেবেও কাজ করেন তিনি।

২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত স্পেন ও ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মিয়ানমারে ভারতের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বিক্রম মিশ্রি। এছাড়াও পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, বেলজিয়াম ও শ্রীলঙ্কায় ভারতের হয়ে বিশেষ প্রোজেক্টেও কাজ করেছেন ৫৯ বছর বয়সী অভিজ্ঞ এই কূটনীতিক।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, এনডিটিভি।

এসএস