যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমাবেশে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে সাবেক এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট কানে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এবং গুলি তার কান ছিঁড়ে বেরিয়ে গেছে।

মাত্র ২০০ ফুট দূর থেকে হামলাকারী ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করেন। এদিকে হামলার পরপরই দ্রুত মঞ্চ থেকে নামিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয় ট্রাম্পকে। পরে নেওয়া হয় হাসপাতালে।

অবশ্য আগামী নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির এই প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন বলে জানানো হয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, মাত্র ২০০ ফুট দূর থেকে ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে এই গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। সন্দেহভাজন হামলাকারী একটি এআর-স্টাইলের রাইফেল দিয়ে ২০০ ফুট থেকে ৩০০ ফুট দূরত্ব থেকে ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় বলে একাধিক আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা বিবিসির মার্কিন অংশীদার সিবিএসকে বলেছেন।

বার্তাসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় শনিবার পেনসেলভেনিয়ায় জনসভায় বক্তব্য রাখছিলেন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাইডেন প্রশাসনের সমালোচনা করছিলেন, এমন সময়ই পরপর গুলির শব্দ শোনা যয়ায়।

সঙ্গে সঙ্গে সাবেক এই প্রেসিডেন্ট নিচে লুটিয়ে পড়ে নিজেকে আড়াল করেন। এসময় সিক্রেট সার্ভিস এজেন্টরা তার পাশেই ছিলেন। এরপর তাকে স্টেজ থেকে নামিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ট্রাম্পকে যখন ধরে স্টেজ থেকে নামানো হচ্ছে, সেই সময়ই কানের পাশ, গালে রক্ত লক্ষ্য করা যায়। স্টেজ থেকে নামার সময় হাত উঁচিয়ে, মুঠো করে হার না মানার ইঙ্গিত করে দেখান ট্রাম্প।

এই ঘটনার পর ট্রাম্পের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, আগামী নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির এই প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন। স্থানীয় চিকিৎসা কেন্দ্রে তাকে পরীক্ষা করা হচ্ছে। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ও উদ্ধারের জন্য পুলিশ প্রশাসনকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন ট্রাম্প।

এদিকে সিক্রেট সার্ভিসের পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, ট্রাম্প ‘ভালো আছেন’ আছেন। তার নিরাপত্তায় যাবতীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। হামলার ঘটনাটি তদন্ত করে দেখবে সিক্রেট সার্ভিস।

অন্যদিকে একাধিক মার্কিন বার্তাসংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সন্দেহভাজন হামলাকারীকে হত্যা করা হয়েছে। ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে পরপর গুলি চালানোর পরপরই পাল্টা জবাব দেয় পুলিশ। শুটার ও তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একজনের মৃত্যু হয়েছে।

হামলার এই ঘটনার ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, বক্তব্য দেওয়ার মাঝেই ডোনাল্ড ট্রাম্প মাটিতে লুটিয়ে পড়ছেন এবং গুলির শব্দ শুনে নিরাপত্তা কর্মকর্তারা তাকে ঘিরে ফেলছেন। তখন ট্রাম্পের মুখ রক্তাক্ত। সেই অবস্থায় তাকে সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। এ ঘটনাকে হত্যার চেষ্টা হিসেবে গণ্য করে তদন্ত শুরু করছেন গোয়েন্দারা। এফবিআই এবং অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলো গুলি চালানোর ঘটনায় তদন্ত শুরু করতে ইতোমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে।

পেনসিলভেনিয়ার জনসভায় এই হামলার ঘটনার ভিডিওতে দেখা গেছে, ট্রাম্প বক্তব্য রাখতে রাখতে হঠাৎ কানে হাত দেন এবং তারপরই নিচে পড়ে যান। এসময় বেশ কয়েক রাউন্ড গুলিবর্ষণের আওয়াজও শোনা যায়। এসময় ট্রাম্পের পেছনে থাকা ব্যক্তিরাও ঝুঁকে পড়েন।

এরপরই সিক্রেট সার্ভিসের এজেন্টরা তড়িঘড়ি করে ট্রাম্পকে সমাবেশ থেকে বের করে গাড়িতে তুলে নেন। গাড়িতে ওঠার আগে অবশ্য ট্রাম্প হাত তুলে সমর্থকদের প্রতি হার না মানার বার্তা দেন।

এরপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে এই গুলি চলনার ঘটনার বিষয়ে অবিহিত করা হয়। তিনি বলেন, ‘পেনসিলভেনিয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমাবেশে গোলাগুলির বিষয়ে আমাকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি নিরাপদে আছেন এবং ভালো আছেন শুনে আমি কৃতজ্ঞ। আমি তার এবং তার পরিবার এবং সমাবেশে উপস্থিত সকলের জন্য প্রার্থনা করছি।’

টিএম