ইসরায়েলি অভিযানের পর ফিলিস্তিনের গাজা শহরের শেজাইয়া এলাকায় ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ৬০টিরও বেশি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া আশপাশের ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অনেক লাশ আটকে আছে বলেও একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

বৃহস্পতিবার গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি জানিয়েছে, শহরের এলাকাগুলো থেকে ইসরায়েলি সৈন্যরা চলে যাওয়ার পর ফিলিস্তিনি চিকিৎসকরা গাজা শহরের শেজাইয়া পাড়ায় ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ৬০ জনেরও বেশি মানুষের লাশ উদ্ধার করেছেন। 

মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আশপাশের ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও কয়েক ডজন লাশ আটকে আছে।’

তিনি বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী আশপাশের ৮৫ শতাংশেরও বেশি আবাসিক ভবন ধ্বংস করে দিয়েছে। শেজাইয়া বর্তমানে একটি দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় পরিণত হয়েছে যা বসবাসের জন্য উপযুক্ত নয়।

এর আগে গত বুধবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, দুই সপ্তাহ আগে অনুপ্রবেশের পর শেজাইয়া এলাকায় তাদের সামরিক অভিযান তারা শেষ করেছে। বাসাল বলেন, গাজা শহরের পশ্চিমে তেল আল-হাওয়াতে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তার ভাষায়, ‘ইসরায়েলের আক্রমণে অনেক পরিবার আটকা পড়েছে এবং উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।’

মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৩৮ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৮৮ হাজারেরও বেশি মানুষ।

জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।

টিএম