ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ও দখলদার ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির চুক্তির একটি কাঠামো তৈরি করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, চুক্তির এ কাঠামোতে রাজি হয়েছে উভয় পক্ষ। এখন চুক্তিটি কীভাবে কার্যকর করা হবে সেটি নিয়ে আলোচনা করছে তারা।

সংবাদমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, চু্ক্তি অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে গাজার নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছে হামাস। ওই সময় উপত্যকাটির নিয়ন্ত্রণ নিজেদের কাছে রাখবে না ইসরায়েলও। এর বদলে গাজায় প্রতিষ্ঠিত হবে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আর এর নিয়ন্ত্রণে থাকবে ফিলিস্তিনি অথরিটির (পিএ) সমর্থিত বাহিনী।

যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তার বরাতে ওয়াশিংটন পোস্টে মার্কিন সাংবাদিক ডেভিড ইগনাটিয়াস লিখেছেন, ‘চুক্তির কাঠামোতে দুই পক্ষ সম্মত। কীভাবে এটি কার্যকর করা হবে এ নিয়ে তারা আলোচনা করছে।’

তবে চুক্তির কাঠামো তৈরি হলেও চুক্তি যে এখনই হয়ে যাবে এমন কিছু নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।

এই সাংবাদিক লিখেছেন, ‘চুক্তির মূল প্রতিবন্ধক হলো দ্বিতীয় ধাপ। এই ধাপে হামাস ইসরায়েলি পুরুষ সৈন্যদের মুক্তি দেবে এবং দুই পক্ষ একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি হবে এবং ইসরায়েল তাদের সব সেনাকে গাজা থেকে প্রত্যাহার করে নেবে।’

তিনি আরও জানিয়েছেন, আলোচনায় বড় যে বিষয়টি পরিলক্ষিত হয়েছে সেটি হলো হামাস এবং ইসরায়েল উভয়ই গাজায় ‘অন্তর্বতীকালীন সরকার’ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে রাজি হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। যেটি যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে শুরু হবে। ওই সময় হামাস ও ইসরায়েল কেউই গাজার নিয়ন্ত্রণে থাকবে না।

তিনি আরও জানিয়েছেন, গাজার নিরাপত্তা দেবে যুক্তরাস্ট্রের প্রশিক্ষিত বাহিনী। আর এতে সমর্থন দেবে মধ্যপন্থী আরব দেশগুলো।

এই বাহিনীর সদস্যদের নেওয়া হবে ফিলিস্তিনি অথরিটির ২ হাজার ৫০০ শক্তিশালী সদস্যদের মধ্য থেকে। যাদের ব্যাপারে ইসরায়েল জানে।

ওয়াশিংটন পোস্টকে মার্কিন এক কর্মকর্তা বলেছেন, হামাস মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোকে জানিয়েছে তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে প্রস্তুত আছে।

২০০৭ সালে ফাতাহ সমর্থিত ফিলিস্তিনি অথরিটির কাছ থেকে ক্ষমতা দখল করে হামাস। এরপর থেকে গাজার নিয়ন্ত্রণ তাদের কাছেই রয়েছে। প্রায় দুই যুগ আগের ওই রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের পর ফিলিস্তিনি অথরিটি ও হামাসের মধ্যে তীক্ত সম্পর্ক বিরাজ করছে।

ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, দুই পক্ষই চায় যুদ্ধ শেষ করতে। কারণ এখন ইসরায়েলের লক্ষ্য হলো ওই অঞ্চলে ইরানপন্থি যেসব সশস্ত্র গোষ্ঠী আছে তাদের মোকাবিলা করার প্রস্তুতি নেওয়া। অপরদিকে হামাসের অস্ত্র ফুরিয়ে আসায় তারা চায় যুদ্ধ বন্ধ হয়ে যাক।

সূত্র: ওয়াশিংটন পোস্ট

এমটিআই