বেলারুশিয়ান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এই ছবিতে বেলারুশে পৌঁছানোর পর চীনা সৈন্যদের সরঞ্জাম নামাতে দেখা যাচ্ছে

যৌথ সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন ও বেলারুশ। সামরিক জোট ন্যাটের সদস্য দেশ পোল্যান্ডের সীমান্তের ঠিক কাছেই সোমবার (৮ জুলাই) থেকে এই মহড়া শুরু করেছে উভয় দেশ।

যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন এই সামরিক জোটের শীর্ষ সম্মেলনের প্রাক্কালে এই মহড়া শুরু করল দেশ দুটি। মঙ্গলবার (৯ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন ও বেলারুশ সোমবার যৌথ সামরিক মহড়া শুরু করেছে বলে বেলারুশিয়ান এবং চীনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। ন্যাটো-সদস্য পোল্যান্ডের সীমানা থেকে মাত্র কয়েক মাইল দূরে এই মহড়া চালাচ্ছে উভয় দেশ।

বেলারুশিয়ান স্পেশাল অপারেশন কমান্ডের প্রধান মেজর জেনারেল ভাদিম ডেনিসেনকোর বরাত দিয়ে বেলারুশিয়ান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় টেলিগ্রাম ম্যাসেজিং অ্যাপে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, ‘বিশ্বে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো উদ্বেগজনক, পরিস্থিতি অস্বস্তিকর, তাই আমরা কৌশলগত কাজ সম্পাদনের নতুন কাঠামো এবং পদ্ধতি অনুশীলন করতে যাচ্ছি।’

মন্ত্রণালয় বলেছে, চলমান এই সামরিক মহড়ার কোডনাম ‘ফ্যালকন অ্যাসাল্ট’। এটি আগামী ১৯ জুলাই পর্যন্ত চলবে এবং ব্রেস্ট শহরের কাছে একটি প্রশিক্ষণ মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। ব্রেস্ট শহরটি দক্ষিণ-পশ্চিম বেলারুশে পোল্যান্ডের সীমান্তে পাশেই অবস্থিত।

এদিকে ন্যাটোর ৩২টি সদস্য দেশের নেতারা মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে একটি শীর্ষ সম্মেলনে মিলিত হবেন। রাশিয়ার আগ্রাসন মোকাবিলা করা ইউক্রেনের জন্য আরও সামরিক ও আর্থিক সহায়তা এই সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে থাকবে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে সেসময় এই হামলা চালানোর জন্য রাশিয়াকে নিজের ভূখণ্ড ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল বেলারুশ।

বেলারুশিয়ান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তার বিবৃতিতে বলেছে, ‘সন্ত্রাস বিরোধী মহড়ার’ অংশ হিসাবে উভয় দেশের সামরিক কর্মীরা রাত্রিকালীন অবতরণ, পানির বাধা অতিক্রম করা এবং জনবহুল এলাকায় অভিযান পরিচালনার মতো বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করবে।

মন্ত্রণালয় তার টেলিগ্রামে পোস্টে একাধিক ছবিও প্রকাশ করেছে। গত রোববার প্রকাশিত ছবিতে চীনা সৈন্যদের বিমান থেকে নামতে এবং বিভিন্ন সরঞ্জাম অফলোড করতে দেখা যাচ্ছে। এছাড়া সোমবার পোস্ট করা ছবিতে সৈন্যদের একটি প্রশিক্ষণ স্থলে মার্চ করতে দেখা যাচ্ছে। মহড়ায় কতজন সেনা অংশ নিয়েছেন তা এখনও স্পষ্ট নয়।

চীনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সোমবার এক বিবৃতিতে বলেছে, গত ৬ জুলাই বেলারুশে পৌঁছানো চীনা সৈন্যদের স্বাগত জানাতে ‘একটি দুর্দান্ত অনুষ্ঠান’ আয়োজন করেছে বেলারুশ।

চীনা ওই মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে ইংরেজিতে প্রকাশিত বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘অংশগ্রহণকারী সৈন্যদের সমন্বয় ক্ষমতা বাড়ানো এবং দুই সেনাবাহিনীর মধ্যে ব্যবহারিক সহযোগিতাকে আরও গভীর করাই এই যৌথ প্রশিক্ষণের লক্ষ্য।’

এদিকে টেলিগ্রামে পৃথক পোস্টে বেলারুশিয়ান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সোমবার বলেছে, বেলারুশের সীমান্তে ন্যাটো বাহিনীর আকার দ্রুত বাড়ছে, যা এই অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলছে।

এতে আরও বলা হয়েছে, ‘উত্তেজনা রোধে আমাদের দেশ সম্ভাব্য সব ব্যবস্থা নিচ্ছে। তবে কেউ যদি আমাদের সীমানা অতিক্রম করে, তাহলে প্রতিক্রিয়া হবে কঠোর।’

টিএম