বাইডেন নির্বাচন থেকে সরবেন না : ভবিষ্যদ্বাণী ট্রাম্পের
দলের ভেতরে-বাইরে যত সমালোচনা চলুক না কেন, আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবেন না যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বাইডেনের পূর্বসূরী প্রেসিডেন্ট এবং আগামী নির্বাচনে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন।
সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউজ চ্যানেল ফক্স নিউজকে টেলিফোনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘দু’টি ব্যাপার এখান গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত দেশের প্রেসিডেন্ট এবং দলের জ্যেষ্ঠ নেতা হওয়ায় ডেমোক্রেটিক পার্টিতে তার অবস্থান বেশ শক্তিশালী। তাছাড়া দলের মধ্যে তার ভক্ত-অনুসারী ও প্রতিনিধিদেরও অভাব নেই। তাই তিনি নিজে থেকে না চাইলে, নির্বাচনী দৌড় থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া অসম্ভব। এমনকি সংবিধাানের ২৫ নম্বর ধারাও এক্ষেত্রে কোনো সহযোগিতা করবে না।’
বিজ্ঞাপন
‘তাছাড়া আমি তাকে জানি। তার ইগো সমস্যা রয়েছে। তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কারণ আমি প্রার্থী হয়েছি। যতক্ষণ আমি প্রার্থী থাকব, ততক্ষণ তিনি নির্বাচন থেকে সরবেন না। তিনি মূলত আমাকে পরাজিত করতে চাইছেন,’ ফক্স নিউজকে বলেন ট্রাম্প।
আরও পড়ুন
যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ২৫ নম্বর ধারা অনুসারে, প্রেসিডেন্ট যদি কোনো কারণে কারো সিদ্ধান্তকে পাত্তা না দেওয়া শুরু করেন, সেক্ষেত্রে ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্যরা একজোট হয়ে প্রেসিডেন্টকে তার পদ ও দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার মতো সক্ষমতা রাখেন।
২০২০ সালের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করে যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হন জো বাইডেন, সে সময় তার বয়স ছিল ৭৮ বছর, ট্রাম্পের ৭৫ বছর। বর্তমানে বাইডেনের বয়স ৮১ বছর এবং দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বয়সে প্রেসিডেন্ট হওয়ার রেকর্ডটি তার।
চলতি বছর নভেম্বরে ফের নির্বাচন হবে। বয়সজনিত কারণে বাইডেনের রাজনৈতিক দল ডেমোক্রেটিক পার্টির অনেক নেতা তাকে এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু বাইডেন সেসব আহ্বানে কর্ণপাত করেননি।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের আয়োজনে গত ২৮ জুন প্রথমবারের মতো নির্বাচনী বিতর্ক হয় ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং জো বাইডেনের মধ্যে। বিতর্কে দেশের অর্থনীতি সামলানো, পররাষ্ট্রনীতির রেকর্ড ও ব্যাপক সংখ্যক অভিবাসী আগমণ ইস্যুতে বাইডেনের তীব্র সমালোচনা করেন ট্রাম্প; কিন্তু স্পষ্ট ও আত্মবিশ্বাসপূর্ণ যুক্তি দিয়ে সেসব সমালোচনা খণ্ডন করতে অনেকাংশে ব্যর্থ হন বাইডেন। তাকে বেশ ক্লান্তও দেখা যাচ্ছিল সে সময়।
বিতর্কের পর তাৎক্ষণিক এক জরিপে জানা গেছে, বিতর্ক অনুষ্ঠানটি দেখেছেন— এমন দর্শকদের মধ্যে ৬৭ শতাংশেই যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দেখতে চান।
ওই বিতর্কের পর বাইডেনের প্রার্থিতা প্রত্যাহার ইস্যুতে নতুন করে আলোচনা শুরু হয় ডেমোক্রেটিক পার্টিতে। দলের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ দাতা জানান, বাইডেন প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে ডেমোক্রেটিক পার্টির তহবিলে অর্থ প্রদান করা বন্ধ করে দেবেন তারা।
তবে বাইডেন এবারও এসব সমালোচনা গ্রাহ্যের মধ্যে আনছেন না। কিছুদিন আগে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “যদি সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমার সামনে এসে আমাকে (প্রার্থিতা প্রত্যাহারের) আদেশ দেন, কেবল তাহলেই আমি তা করতে পারি।”
সূত্র : রয়টার্স
এসএমডব্লিউ