১৮০০ সালের মাঝামাঝি থেকে বৈশ্বিক তাপমাত্রার রেকর্ড রাখা শুরু করেছে ইউরোপ। তারপর থেকে এ পর্যন্ত যত জুন মাস গিয়েছে, সেসবের মধ্যে সবচেয়ে উষ্ণ ছিল ২০২৪ সালের জুন মাস।

ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বৈশ্বিক জলবায়ু পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন্স কোপারনিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস (সিথ্রিএস) সোমবার তাদের মাসভিত্তিক বুলেটিনে নিশ্চিত করেছে এ তথ্য। বুলেটিনে বলা হয়েছে, ১৮৫০ সাল থেকে ১৯০০ সাল পর্যন্ত, অর্থাৎ প্রাকশিল্প যুগ এবং শিল্পযুগের প্রাথমিক পর্যায়ের জুন মাসগুলোতে গড়ে যে তাপামাত্রা বিরাজ করত—তার তুলনায় ২০২৪ সালের জুনে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা ছিল ১ দশমিক ৬৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।

সিথ্রিএসের আওতাধীন জলবায়ু গবেষণা সংস্থা বার্কলে আর্থের কর্মকর্তা জ্যাক হাউসফাদার রয়টার্সকে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এতদিন পর্যন্ত ২০২৩ সালের জুন মাসকে ইতিহাসের উষ্ণতম জুন বলে মনে করা হতো। কিন্তু ২০২৪ সালের জুন সেই রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।’

রেকর্ড উষ্ণতার কারণে বিগত বছরের জুন মাসগুলোর চেয়ে ২০২৪ সালের জুনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দীর্ঘ তাপপ্রবাহ, খরা, অতিমাত্রায় বর্ষণ, বন্যা, ঘূর্ণিঝড় প্রভৃতি প্রাকৃতিক দুর্যোগও ঘটেছে বেশি। এসব দুর্যোগে প্রাণ হারিয়েছেন ১ হাজারেরও বেশি মানুষ।

গত জুন মাসের প্রায় পুরোটা জুড়ে তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির ওপর দিয়ে। অনাবৃষ্টি ও খরার কারণে মেক্সিকোর কয়েকটি শহরের সুপেয় পানির উৎস শুকিয়ে গেছে।

লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের অধীন গবেষণা সংস্থা গ্রেন্থাম ইনস্টিটিউটের জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ফ্রেডেরিক ওটো রয়টার্সকে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এখন বিশ্বজুড়ে এল নিনো আবহাওয়া প্যাটার্ন চলছে। এই ধরনের আবহাওয়া পরিস্থিতিতে গ্রীষ্মকালে অতিরিক্ত উষ্ণতা স্বাভাবিক; তবে গত জুনে যে তাপমাত্রা দেখেছে বিশ্ব— তার প্রধান কারণ এল নিনো আবহাওয়া প্যাটার্ন নয়, বরং অতিমাত্রায় জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার ও গ্রিন হাউস গ্যাসের নিঃসরণ।’

‘আমার ধারণা, ২০২৪ সাল শিগগিরই বিশ্বের ইতিহাসে উষ্ণতম বছর হতে যাচ্ছে, কারণ রাতারাতি জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার ও গ্রিনহাউস গ্যাসের নিঃসরণ হ্রাস করা সম্ভব নয়,’ রয়টার্সকে বলেন ফ্রেডেরিক।

সূত্র : রয়টার্স

এসএমডব্লিউ