ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় জাতিসংঘ-পরিচালিত স্কুলে বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। এতে কমপক্ষে ১৬ জন নিহত হয়েছেন। হামলায় আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ।

জাতিসংঘ-পরিচালিত এই স্কুলটি আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল এবং বহু মানুষ সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন। রোববার (৭ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গাজা উপত্যকায় বাস্তুচ্যুত লোকদের আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত জাতিসংঘ পরিচালিত একটি স্কুলে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ১৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে গাজা সরকারের মিডিয়া অফিস জানিয়েছে। মূলত ইসরায়েল গত ৯ মাস ধরে অবরুদ্ধ উপকূলীয় এই অঞ্চলে বর্বর আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে।

শনিবার এক বিবৃতিতে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস বলেছে, মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের আল-জাউনি স্কুলে চালানো ওই হামলায় ১৬ জন নিহত হওয়ার পাশাপাশি আরও ৭৫ জনেরও বেশি লোক আহত হয়েছেন।

এতে বলা হয়েছে, ‘আমরা বেসামরিক নাগরিক, শিশু এবং নারীদের বিরুদ্ধে এই চলমান অপরাধ এবং গণহত্যার জন্য (ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর) নিন্দা করছি।’

আল জাজিরা বলছে, মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের আল-জাউনি স্কুলটি ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ)-এর মাধ্যমে পরিচালিত হতো। গত বছরের অক্টোবরে গাজায় আগ্রাসন শুরুর পর থেকে ইসরায়েল এর আগে বহু স্কুলেই এই ধরনের হামলা চালিয়েছে।

মূলত গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজাজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৩৮ হাজার ৯৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডটি খাদ্য, পানি, ওষুধ এবং অন্যান্য মানবিক সহায়তা সরবরাহের মারাত্মক সংকটের সম্মুখীন হয়েছে।

এদিকে শনিবার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজা ভূখণ্ডে বোমাবর্ষণ আরও বাড়িয়েছে এবং এতে পাঁচ সাংবাদিকসহ বহু সংখ্যক ফিলিস্তিনিও নিহত হয়েছেন। একদিনে পাঁচ সাংবাদিকের মৃত্যুর মাধ্যমে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা ১৫৮ জনে দাঁড়িয়েছে।

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস শুরু থেকেই বলে আসছে, সংঘটিত অপরাধ যেন প্রকাশ না পায় সেজন্য ইসরায়েলিরা সেনারা ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের উপর ইচ্ছাকৃত হামলা চালাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কভিত্তিক এনজিও ‘ইন্টারন্যাশনাল কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট’ জানিয়েছে, ১৯৯২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত যত সংঘাত হয়েছে তার মধ্যে ‘গাজার যুদ্ধ সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী ছিল’।

ওই বছর থেকে তারা সাংবাদিকদের হত্যার তথ্য নথিভুক্ত করা শুরু করে।

টিএম